ব্রহ্মপুত্র নদকে বাঁচানোর দাবিতে এবার হাঁটুপানিতে নেমে মানববন্ধন করেছেন ময়মনসিংহ শহরের নাগরিকেরা। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের কাছারিঘাট এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
‘নাগরিক আহাজারি’ শিরোনামে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন নামের একটি সংগঠন।
এর আগে গত ৫ মে ব্রহ্মপুত্র নদকে বাঁচানোর দাবিতে একই স্থানে ‘মৃতের চিৎকার’ নামে ব্যতিক্রম এক কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই দিন ব্রহ্মপুত্রের বুকে হাঁটুপানিতে সাজানো হয় প্রতীকী মঞ্চ। একটি টেবিলে রাখা হয় কিছু খাবার; কিন্তু পানি ছিল না। প্রতীকী ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ময়মনসিংহ নগর এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে তরুণ-তরুণীরা যোগ দেন।
ব্রহ্মপুত্র রক্ষার দাবি ছাড়াও ময়মনসিংহের নাগরিকদের আরও বিভিন্ন দাবি জানানো হয় আজকের কর্মসূচি থেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খননকাজ শুরু হওয়ার পর এ নদ যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে। মূলত খননের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদকে একটি সরু খালে পরিণত করা হচ্ছে। খননের প্রকল্পে এ নদের ১০০ মিটার প্রস্থে করা হয়েছে খনন। ২০২১ সালে খনন শুরু হয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলবে। তিন বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও খননের কোনো ফল পাওয়া যায়নি; বরং খনন হওয়া বিভিন্ন এলাকায় চর জাগছে।
এ অবস্থার জন্য অপরিকল্পিত খননকে দায়ী করেছেন বক্তারা। তাঁদের অভিযোগ, নদের উৎসমুখে খনন না করে উজানে খনন করা হচ্ছে।
১৯৮৯ সালে গঠিত হয় ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নাগরিক আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ বিভাগ, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডসহ নানা ধরনের উন্নয়ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান হলেও এখনো নাগরিক সুবিধা বাড়েনি। ময়মনসিংহ নগরের যানজট ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ যানজট মানুষের ভোগান্তির কারণ। নগরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড যানজটের বড় কারণ হলেও তা সরানো হচ্ছে না।
ময়মনসিংহে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, গ্যাস-সংযোগ না থাকায় অনেকেই ব্যাংকঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দিতে পারছেন না। এতে বাড়ির মালিকেরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন।
এ ছাড়া মানববন্ধন থেকে ময়মনসিংহ নতুন বিভাগীয় শহর দ্রুত বাস্তবায়ন ও ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় প্রতিদিন এক জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচলের দাবি জানানো হয়। ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি এ এইম এম খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক নেতারা।