খোরশেদ–বর্ষার বিয়েতে ‘বাধা’ হয়নি উচ্চতা

খোরশেদ আলম ও বর্ষা খাতুন। গত শনিবার শেরপুর সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া এলাকা
ছবি: সংগৃহীত

খোরশেদ আলম জন্মের পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২৮ বছর বয়সেও তাঁর উচ্চতা তিন ফুট। মোটরসাইকেল মেকানিকের কাজ করে ভালোই আয় করেন তিনি। তবে কম উচ্চতার কারণে তাঁর জন্য পাত্রী পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন খোরশেদ। পাত্রী বর্ষা খাতুনের উচ্চতা পাঁচ ফুট। দুজনের উচ্চতা ভিন্ন হলেও তা তাঁদের বিয়েতে বাধা হয়নি।

শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্যবয়ড়া এলাকার মোহন মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম। কনে বর্ষা শেরপুর পৌরসভার দীঘারপাড় এলাকার বাচ্চু মিয়ার মেয়ে।

গত শুক্রবার দীঘারপাড় এলাকার কনের বাড়িতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেনমোহরে খোরশেদ আলমের সঙ্গে বর্ষা খাতুনের বিয়ে হয়। শনিবার খোরশেদের মধ্যবয়ড়া এলাকার বাড়িতে আয়োজন করা হয় বউভাত অনুষ্ঠানের। এতে বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন। বিয়েতে খোরশেদ খরচ করেন প্রায় তিন লাখ টাকা। এ বিয়েতে বর-কনেসহ স্বজনেরা ভীষণ খুশি। দেরিতে হলেও খোরশেদের বিয়ে হওয়ায় এলাকাবাসীও বেশ খুশি।

নবদম্পতি খোরশেদ ও বর্ষা
ছবি: সংগৃহীত

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, খোরশেদরা চার ভাইবোন। পঞ্চম শ্রেণির পর দারিদ্র্যের কারণে আর পড়ালেখা করতে পারেননি। পরে মাত্র ১৪ বছর বয়সে শেরপুর শহরের তিনআনী বাজার এলাকার একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এখন তিনি একজন দক্ষ মোটরসাইকেল মেকানিক। তাঁর আয়-রোজগারও বেশ ভালো। স্থানীয় ঘটক বুদু মিয়ার সহযোগিতায় বর্ষার সঙ্গে খোরশেদের বিয়ে ঠিক করা হয়। গত শুক্রবার খোরশেদ আর বর্ষার বিয়ে সম্পন্ন হয়।

এ বিয়ে নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। বিয়ের তিন দিন পর গতকাল সোমবারও অনেকে নববধূকে দেখতে মধ্যবয়ড়া এলাকার খোরশেদের বাড়িতে যান।

খোরশেদের মামাতো ভাই জাবেদ আলী বলেন, খোরশেদ শারীরিক প্রতিবন্ধী। গত শুক্রবার অনেক ধুমধামে তাঁর বিয়ে হয়েছে। এর আগে তাঁর জন্য অনেক মেয়ে দেখা হয়েছিল। কিন্তু খোরশেদের শারীরিক প্রতিবন্ধিতার জন্য মেয়েরা রাজি হননি। এবার একটি মেয়ে ও তাঁর পরিবার রাজি হওয়ায় খোরশেদের বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে। এ বিয়েতে সবাই খুব আনন্দিত।

খোরশেদের প্রতিবেশী মধ্যবয়ড়া এলাকার বাসিন্দা ও শেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খোরশেদ একজন ভালো মনের মানুষ। অনেক কষ্ট করে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। তাঁর আয় দিয়ে তাঁদের পরিবার চলে। তাঁদের সুখী দাম্পত্য জীবন কামনা করেন তিনি।