আশ্রয় খুঁজতে গিয়ে আটকে পড়া লক্ষ্মীপেঁচাটিকে যেভাবে উদ্ধার হলো

নাটোরে রোববার সকালে সিংড়া ছোট চৌগ্রামের এক বাড়িতে আটকে পড়া লক্ষ্মীপেঁচাকে উদ্ধার করে পরিবেশকর্মীরা
ছবি: সংগৃহীত

মাটির বাড়ির কার্নিশে কবুতরের পরিত্যক্ত ঘরে বসবাস করছিল এক জোড়া ঘুঘু। ওই ঘরে ছিল তাদের সদ্য জন্ম নেওয়া ছানা। বাড়ির মালিক ঘুঘুছানাটির সুরক্ষার জন্য তাদের ঘরটি কারেন্ট জাল দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন। বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি এক লক্ষ্মীপেঁচা। সে–ও একই ঘরে বসবাসের জন্য আশ্রয় নিতে যায়। কিন্তু জালে জড়িয়ে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর পাখিটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা।

আজ রোববার সকালে ওই লক্ষ্মীপেঁচাকে উদ্ধার করা হয় নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের ছোট চৌগ্রামের মেহেদী হাসানের বাড়ি থেকে।

সিংড়ার চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আজ ভোরে ছোট চৌগ্রাম থেকে স্বেচ্ছাসেবীদের মুঠোফোনে তাঁরা একটি লক্ষীপেঁচার জালে আটকে থাকার খবর পান। সকাল আটটার দিকে তাঁরা পাঁচ পরিবেশকর্মী ছোট চৌগ্রামের মেহেদী হাসানের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, মাটির উঁচু ঘরের কার্নিশে একটি কবুতরের ঘর। ঘরের প্রবেশমুখে রাখা কারেন্ট জালে আটকা পড়ে একটি লক্ষ্মীপেঁচা আর্তনাদ করছে। ঢোপঘরের ভেতর থেকে ঘুঘুর বাচ্চার কান্নার শব্দও পাওয়া যায়। ঢুকতে না পেরে আশপাশে উড়ছে বাচ্চাটির মা–বাবা।

আরও পড়ুন

এটা দেখে পরিবেশকর্মীরা মই বেয়ে ওপরে উঠে হাঁসুয়া দিয়ে পুরো জালের ফাঁদ কেটে মাটিতে নামান। পরে জাল থেকে লক্ষ্মীপেঁচাটিকে বের করেন তাঁরা। এ সময় লক্ষ্মীপেঁচাটি সামান্য আহত হয়। পাখিটিকে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেন। দুপুরের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হলে লক্ষ্মীপেঁচাটিকে একই গ্রামের একটি বাঁশঝাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রায় দুই যুগ ধরে চলনবিল এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজ করে চলেছেন। এই এলাকার প্রায় প্রতিটি গ্রামে তাঁদের স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন। কোথাও কোনো পাখি বা প্রাণী বিপদে পড়ার খবর পেলেই তাঁরা সেখানে ছুটে যান। এক স্বেচ্ছাসেবীর মাধমে খবর পেয়ে তাঁরা লক্ষ্মীপেঁচাটিকে উদ্ধার করেন এবং চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন।