দখলদারত্বের রাজনীতি আমাদের প্রয়োজন নেই: জামায়াতের আমির

সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নে বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতের আমির। গতকাল সন্ধ্যায়ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘যে রাজনীতি মানুষের পকেট কাটে, ওই রাজনীতি আমাদের দরকার নেই। যে রাজনীতি মানুষের সম্পদ লুণ্ঠন করে, যে রাজনীতি দখলদারত্ব শেখায়, ওই রাজনীতিও আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। বরং ওই রাজনীতি আমাদের দরকার, যে রাজনীতি আমাদের প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করতে এবং ভালোবাসতে শেখায়। আমরা একটা ভালোবাসার বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর পৌরবাজারের সামনে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন। শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ৫৬ জন চৌকস দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে যারা হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিল, তারা তা অব্যাহত রেখেছিল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এই নোয়াখালীর মাটিতেও অনেক রক্ত ও জীবন ঝরে গেছে। সারা বাংলাদেশে তারা এই তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা সারা দেশকে একটা জাহান্নামে পরিণত করতে চেয়েছিল।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে শফিকুর রহমান পথসভায় বলেন, ‘এদের একটাই চাওয়া ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। সব ক্ষেত্রে তারা এক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছে, এটা কি তাদের অপরাধ ছিল? হ্যাঁ, ওদের কাছেই অপরাধ ছিল, যারা মানুষকে মানুষই মনে করেনি। যারা মানুষকে তাদের দাস মনে করেছে। মানুষকে তারা সম্মান দিত না, ভালোবাসত না। তাদের কাছে ন্যায্য চাওয়াটাই ছিল অপরাধ। এ জন্যই তো গুলি চালিয়ে কারও বুক ঝাঁঝরা করেছে, কাউকে পঙ্গু করেছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি দেশের মাটি ও মানুষের জন্য। তোমাদের ন্যায্য এই দাবিতে আমরাও রাস্তায় নেমেছিলাম। তোমাদের কথা দিচ্ছি এই দাবি বাস্তবায়নে ইনশা আল্লাহ আমরা আমাদের রাজনীতি করব।’

পথসভার আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে নির্যাতনের শিকার এক নারীর সঙ্গে দেখা করতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নে যান জামায়াতের আমির। এ সময় ওই বাড়ির পাশের রাস্তায় দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনতার উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মানুষরূপী কিছু পশু এখানে বড় ধরনের অপকর্ম করেছে। সেদিন দেশটাকে একটা জাহান্নাম বানিয়ে রাখার কারণে মানুষ মুখ ফুটে প্রতিবাদ করতে পারেনি। এখানে যা হয়েছে, এ রকম নিকৃষ্ট উদাহরণ বাংলাদেশে কম আছে।’

এ সময় শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় গিয়ে আমরা মানুষের ওপর লাঠি ঘুরাব না। ক্ষমতার গরম দেখাব না। নিজের কপাল অবৈধভাবে বড় করার চেষ্টা করব না। এটা আমাদের ইচ্ছা নাই। আল্লাহর ভয়ে এবং ভালোবাসার জায়গা থেকে, যে মানুষটা মানুষের কাছে শ্রদ্ধার উপযুক্ত সে শ্রদ্ধা পাবে, আর যে ভালোবাস পাওয়ার যোগ্য সে ভালোবাস পাবে। যেখানে মজলুম থাকবে, সেখানে আমরা বাজপাখির মতো গিয়ে হাজির হব।’