হলে নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রীদের বিক্ষোভ

হলের নিরাপত্তা জোরদারসহ ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বেগম সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা। রোববার রাত নয়টায় হলের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

হলের নিরাপত্তা জোরদারসহ ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা। আজ রোববার রাত সাড়ে আটটায় হলের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন তাঁরা। মিছিলটি মেয়েদের হলগুলো ঘুরে আবারও সুফিয়া কামাল হলের সামনে এসে শেষ হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা হলের সামনে ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ করেন। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে রাত ১০টায় হল প্রশাসনের আশ্বাসে তাঁরা সমাবেশ শেষ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের তিনটি আবাসিক হলের জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে চুরির চেষ্টা করেছেন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। ছাত্রীদের গালিগালাজও করেন তিনি। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে রোববার ভোর পাঁচটার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হল, শেখ হাসিনা হল ও বেগম সুফিয়া কামাল হলে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

সমাবেশে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, হল প্রশাসন ভাঙা জানালার কাচ জোড়াতালি দিয়ে লাগিয়েছে। নামকাওয়াস্তে বৈদ্যুতিক বাতি লাগিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, প্রাধ্যক্ষ চুরির চেষ্টার বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য বলেছেন।

শিক্ষার্থীদের বাকি দাবিগুলোর মধ্যে আছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে আনা, দেয়ালের উচ্চতা কমপক্ষে ১০ ফিট বাড়ানো, হলে সিসিটিভি লাগানো, হল মনিটরিংয়ের জন্য জনবলের ব্যবস্থা করা, হলের সামনের সুড়ঙ্গ মাটি দিয়ে ভরাট করা, হলের চারপাশে ফ্ল্যাশলাইটের ব্যবস্থা করা, নিরাপত্তা প্রহরীদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন নিশ্চিত করা, নিচতলায় প্রতিটি কক্ষের জানালায় পর্দার টাঙানো, দুজন হল সুপারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী লিজা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসকে অনেক নিরাপদ মনে করতাম। হলে এই ঘটনার পর এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষক মোসাব্বের হোসেন ঘটনাস্থলে এসে বলেন, ‘হল প্রশাসন আগামীকাল (আজ) মিটিং করবেন। হলের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করব। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর ওপর জোর দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোতাহার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাবিগুলো আমি শুনেছি। তাঁদের সব দাবি যৌক্তিক। তাঁদের দাবিগুলো নিয়ে আগামীকাল আমরা বসব। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।’