লালমনিরহাটে জাতীয় পার্টির দুই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিএনপিতে যোগদান

জাতীয় পার্টির (জাপা) বিভিন্ন পর্যায়ের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠেছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাটে জাতীয় পার্টির (জাপা) বিভিন্ন পর্যায়ের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে তাঁরা বিএনপিতে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি। পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি নুর উদ্দিন মাস্টার, সহসভাপতি এরশাদুল হক মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন মহিলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ফিরোজা বেগম নেতৃত্ব ইউনিয়নটির ১, ৫, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। অনুষ্ঠানে আসাদুল হাবিব জাপা ছেড়ে আসা নেতা-কর্মীদের হাতে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ ও শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে রজনীগন্ধা ফুল তুলে দেন। সেই সঙ্গে জাপা ছেড়ে আসা নেতা-কর্মীরাও আসাদুল হাবিবের হাতে ফুল তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হাততালি দিয়ে জাপা ছেড়ে আসা নেতা-কর্মীদের স্বাগত জানান।

জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেওয়া নেতা–কর্মীদের হাতে ধানের শীষ তুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত আটটার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বক্তব্য দেন বিএনপিতে যোগ দেওয়া নুর উদ্দিন মাস্টার, এরশাদুল হক মাস্টার ও রফিকুল ইসলাম। নুর উদ্দিন বলেন, ‘আমরা লাভের জন্য জাতীয় পার্টি থেকে অন্য রাজনৈতিক দলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিলে আওয়ামী লীগের দিকে যেতাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ের ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন আর আগের মতো তাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই। তারা গায়ের জোরে, প্রশাসনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রয়েছে। এটা মানুষ জানে। মানুষ এ থেকে মুক্তি চায়। জাতীয় পার্টি তাদের এ মুক্তি এনে দিতে পারবে না, তাই আমরা বিএনপিতে গেলাম, আজ না হোক, কাল অথবা অন্য কোনো দিন বিএনপির হাত ধরে গণতন্ত্রের মুক্তি আসবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদানকারী নেতাদের বক্তব্য শুনে তাঁদের সাবেক দলের ভেতরের অনেক কষ্ট ও বঞ্চনার কথা জানতে পারলেন। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির স্থানীয় কয়েকজন নেতা তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিএনপিতে যোগদানের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেই সঙ্গে তাঁদের সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

আসাদুল হাবিব আরও বলেন, তাঁরা জাতীয় পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগে না গিয়ে বিএনপিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এতে মনে হচ্ছে, বিএনপি গণতন্ত্র মুক্তির জন্য ও স্বাধীন ভোটাধিকারের জন্য যে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে, তার প্রতি দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। আওয়ামী লীগের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। দলের এ সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করলে দল তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।