প্রকৌশলী থানায় এসে বললেন, ‘আমি বাবাকে খুন করেছি, গ্রেপ্তার করুন’

ঠাকুরগাঁও জেলার মানচিত্র

ঠাকুরগাঁওয়ে বাবাকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন ছেলে। পুলিশ বলেছে, আত্মসমর্পণ করা গোলাম আজম বাবার হত্যার দায় স্বীকার করে নিজের বিচার দাবি করলে তাঁকে আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজলে এলাহী একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। এখন তিনি অবসরজীবন কাটাচ্ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্রে  জানা গেছে, ফজলে এলাহী পরিবার নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকায় থাকতেন। তাঁর ছয় সন্তানের মধ্যে গোলাম আজম চতুর্থ। তিনি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মাসখানেক আগে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন তিনি। বাড়িতে আসার পর থেকে আজম অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে জোর করেই মানসিক রোগীর চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। এতে পরিবারের লোকজনের ওপর তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে আজম তাঁরা বাবা ফজলে এলাহীর ঘরে ঢুকে মাথায় লোহার রড দিয়ে কয়েকবার আঘাত করেন। পরে তিনি বাবার বুকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ফজলে এলাহী ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাবার মৃত্যু নিশ্চিত হলে ঘরে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যান আজম।

এরপর রাত আড়াইটার দিকে গোলাম আজম সদর থানায় এসে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা নির্মল রায়কে বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে খুন করেছি। এর জন্য আমি নিজের বিচার চাই। আমাকে গ্রেপ্তার করুন।’

আজমের কথায় বিশ্বাস না হলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আজমের কাছ থেকে তাঁর বোনের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে কল দিয়ে বিষয়টি যাচাই করতে বলেন। সে সময় আজমের বোন বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজায় তালা দেখতে পান। পরে থানা-পুলিশ ওই বাসা থেকে ফজলে এলাহীর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জমিরুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি রুয়েট থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করতেন গোলাম আজম। পরে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। এরপর তাঁর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এ নিয়ে তাঁদের পরিবারে ঝামেলা চলছিল।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম আজম পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি সুস্থ। তারপরও পরিবারের লোকজন তাঁকে মানসিক রোগী মনে করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি (আজম) গতকাল রাতে সুযোগ পেয়ে বাবার ওপর আক্রমণ করেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।