পঞ্চগড়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দুই ব্যক্তির যাবজ্জীবন

আদালত
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে এক গৃহবধূকে (৩০) দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দুই ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বি এম তারিকুল কবীর এই রায় দেন।

সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের নিমাইপাড়া-বোর্ড অফিস এলাকার কাবুল হোসেন ওরফে সহিদুল (৪৩) এবং একই ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকার নাজমুল হুদা (৪৫)। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার অপর দুই আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আজিজার রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ স্বামীর বাড়ি থেকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হারিভাসা ইউনিয়নের ঢাঙ্গীপুকুরী এলাকায় ভাই মজির উদ্দিনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর তিনি পাশের হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ফুলপাড়া এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাইয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় ৯ সেপ্টেম্বর তাঁর ভাই পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় ১৫ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার শালমারা গড়ের একটি ঝোপঝাড়ে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধারের সময় জুতা, ইয়ারফোন ও কাপড়চোপড় দেখে লাশটি ওই গৃহবধূর বলে শনাক্ত করেন স্বজনেরা। ওই দিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিদের নামে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার পর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জোব্বার সরকার চারজন আসামির নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত এই রায় দেন। মামলায় খালাস পাওয়া অপর দুই আসামি হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঢাঙ্গী পুকুরী এলাকার রবিউল ইসলাম (৬০) এবং একই ইউনিয়নের ব্রম্মতল এলাকার কাবুল হোসেন (৪৫)।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী রিয়ানুস সাঈদ বলেন, ‘এই মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা মনে করি আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এ জন্য আমরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় উচ্চ আদালতে আপিল করব।’