পঞ্চগড়ে নানার পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর দেখতে এসে লাশ হয়ে ফিরল শিশু

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িঘর অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে সৈয়দ আলীর। নানার পুড়ে যাওয়া সে ঘর দেখতে মা-বাবার সঙ্গে এসেছিল চার বছর বয়সী শিশু মিম। পরে বাড়ি ফেরার জন্য মহাসড়কে উঠতেই একটি সিমেন্টবোঝাই লরি ধাক্কা দেয় শিশুটিকে। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় মিমের।

আজ শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ধামনাগছ এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিম একই উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কাটাপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রীর মৃত্যুর পর ধামনাগছ এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে একা বসবাস করতেন সৈয়দ আলী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় তাঁর বাড়িঘর। খবর পেয়ে মেয়ে শহিদা বেগম ও জামাতা আবু বক্কর সিদ্দিক তাঁদের চার বছর বয়সী মেয়ে মিমকে নিয়ে রাতেই দেখতে আসেন সৈয়দ আলীর পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর। আজ সকালে মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার জন্য শিশুটি নানার বাড়ির সামনে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে উঠলে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধাগামী একটি সিমেন্টের বস্তাবোঝাই লরি তাকে ধাক্কা দেয়। এতে শিশুটি ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি ঘটনাস্থলে যান। পরে তিনি নিহত শিশুটির পরিবার ও বাড়িঘর পুড়ে যাওয়া সৈয়দ আলীকে আর্থিক সহায়তা করেন।

তিরনইহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, সৈয়দ আলীর দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে সরকারিভাবে পাওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে তিনি একাই থাকতেন আর দিনমজুরের কাজ করে চলতেন। গতকাল সন্ধ্যায় সেই বাড়িঘর পুড়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। আর এই পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর দেখতে এসে চার বছরের নাতনিটাও মারা গেল। একসঙ্গে দুটি দুর্ঘটনায় এলাকায় শোক নেমে এসেছে।

তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক ফরহাদ হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার পর সিমেন্টের বস্তাবোঝাই লরিটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। নিহত শিশুটির পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।