স্মৃতি অম্লান চত্বরের পাশে আবর্জনার স্তূপ

গত ১ আগস্ট আবর্জনা পরিষ্কার করতে পৌরসভাকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর শহরের স্মৃতি অম্লান চত্বরটির পাশে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। তিনমাথার সড়ক চত্বরে গতকাল দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর শহরের জিআরপি মোড়ে অবস্থিত স্মৃতি অম্লান চত্বরের পাশে আবর্জনার স্তূপ জমেছে। আবর্জনা সরানোর দাবিতে বিক্ষোভও করে কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এখনো সে আবর্জনা সরায়নি।

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, স্মৃতি অম্লান চত্বরের এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সড়কের পাশে জমে আছে পানি। সেখানে মশা বাসা বেঁধেছে। চত্বরের বিপরীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আবর্জনা। সেখানে উড়ছে মাছি।

পথচারীরা বলেন, তিনমাথার সড়কে চত্বরটি অবস্থিত। চত্বর থেকে উত্তরে চলে গেছে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা ও স্টেশন। দক্ষিণে শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক ও পূর্ব দিকে মোড় পেরিয়ে শেরেবাংলা সড়কের সংযোগ রাস্তা। চত্বরটির

পাশে রয়েছে সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়। এমন একটি ব্যস্ততম জায়গায় আশপাশের লোকজন কীভাবে আবর্জনা ফেলেন, তা তাঁরা বোঝেন না। এর পাশ দিয়েই তাঁদের আসা-যাওয়া করতে হয়। অথচ পৌরসভা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১ আগস্ট ওই এলাকা থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করতে সৈয়দপুর পৌরসভাকে সময়সীমা বেঁধে (আলটিমেটাম) দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে শহীদস্বজনদের সংগঠন রক্তধারা-৭১, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও কথাকলি খেলাঘর আসর ওই আলটিমেটাম দেয়। সংগঠনগুলো এ নিয়ে মানববন্ধনও করেছে। কিন্তু পৌরসভার তৎপরতা গত এক মাসেও চোখে পড়েনি।

রক্তধারা-৭১ সৈয়দপুর শাখার সদস্যসচিব মহসিনুল হক বলেন, ‘আমরা পৌরসভাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জায়গা ওই স্মৃতি অম্লান। এর সামনে থেকে ভাগাড় সরানো হোক। এ নিয়ে কর্ণপাত করছেন না কেউ। আমরা শহীদের সন্তানেরা এ নিয়ে বেশ ব্যথিত।’

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সৈয়দপুর শাখার সভাপতি জান্নাতুল ইসলাম কবির বলেন, শ্রদ্ধার জায়গায় অশ্রদ্ধার মতো ঠেকছে ওই ভাগাড়। আবর্জনার স্তূপ অন্যত্র সরানো না হলে আবার আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।

বিনোদন পাক্ষিক আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান বলেন, যাঁদের অবদানে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই শহীদদের প্রতি এ অবজ্ঞা মেনে নেওয়া যায় না। আবর্জনার স্তূপ না সরালে তিনি একাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অনশনে নামবেন।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আক্তার জাহান বলেন, ওই এলাকায় কোনো আবর্জনা ফেলার স্থান (ডাস্টবিন) নেই। ফলে আশপাশের লোকজন গৃহস্থালি আবর্জনা সেখানে ফেলছেন। পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা দ্রুত ওই এলাকায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।