দিনাজপুরে এক কাউন্সিলরকে নারীর ‘জুতাপেটা’, প্রতিবাদে নাগরিক সেবা বন্ধ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সালিসি বৈঠকে বিবাদীপক্ষের এক নারী বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মেনে এক পৌর কাউন্সিলরকে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ করে সুষ্ঠু বিচার না পাওয়ায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সুবিধা বন্ধ রেখেছেন কাউন্সিলররা।

ওই কাউন্সিলরের নাম ইমরান হোসেন ওরফে দুলাল। তিনি হাকিমপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অভিযুক্ত নারী সাবিনা ইয়াসমিন পৌর শহরের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ক্যাম্পপট্টি মহল্লার সাইদুল ইসলাম ওরফে হ্যাবলের স্ত্রী।

থানায় দেওয়া অভিযোগ ও ভুক্তভোগী কাউন্সিলর সূত্রে জানা গেছে, ৭ মার্চ সন্ধ্যার দিকে হাকিমপুর পৌর শহরের পাবনা বেকারি মোড়ে কাউন্সিলর ইমরানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সালিসি বৈঠক বসে। বৈঠকে কাউন্সিলরের পাশাপাশি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বাদী-বিবাদীপক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালে বিবাদীপক্ষের সাবিনা ইয়াসমিন বৈঠকের সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি রাগারাগি করে সেখান থেকে চলে যান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাবিনা ইয়াসমিন স্থানীয় মাসুদ রানা ওরফে পচা ও রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে লাঠিসোঁটাসহ কাউন্সিলের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আসেন। তাঁরা কাউন্সিলরকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে সাবিনা কাউন্সিলরের শার্টের কলার চেপে ধরেন এবং নিজের পায়ের জুতা খুলে তাঁর গালে-মুখে মারতে থাকেন। কাউন্সিলের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে সাবিনা ও তাঁর সঙ্গীরা চলে যান।

এ ঘটনায় পরের দিন ৮ মার্চ দুপুরে কাউন্সিলর ইমরান হোসেন তিনজনের নাম উল্লেখ করে হাকিমপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তবে থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় এর প্রতিবাদে গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ রেখেছেন কাউন্সিলররা। এতে সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

এ বিষয়ে হাকিমপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিনহাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পৌর কাউন্সিলর ইমরান হোসেনকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেননি। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেননি। এ জন্য তাঁরা নাগরিক সেবা দেওয়া বন্ধ রেখেছেন। কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিরা পলাতক। তাঁদের ধরতে পুলিশকে একটু সময় দিতে হবে।