নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন ভুক্তভোগীরা

রাজশাহী–৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে রোববার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী-৬ (চারঘাট ও বাঘা) আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তাঁরা হামলা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। রোববার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ আসনে টানা চতুর্থবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সদ্য সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রাহেনুল হক পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৭৮ ভোট। সংবাদ সম্মেলন করা ব্যক্তিরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুলের পক্ষে কাজ করেছেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বাঘা পৌরসভা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা, নাট্যপরিচালক শিমুল সরকার, ব্যবসায়ী আবির ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহাবুল ইসলাম প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্য পড়েন সেলিম রেজা। তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকে কাঁচি প্রতীকের নেতা-কর্মীদের নানাভাবে বাধা দেন নৌকা প্রতীকের পক্ষের লোকজন। ভোটাররা কাঁচি প্রতীকে ভোট দেওয়ায় নৌকা প্রতীকের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা করেন। নির্বাচনের দিন রাতে বাঘার গড়গড়ি ইউনিয়নে নাট্যপরিচালক শিমুল সরকারকে রড, হাতুড়ি দিয়ে আঘাতে জখম করা হয়েছে। একই দিন বাঘা পৌরসভার অন্তর্গত চক নারায়ণপুরে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহাবুল ইসলামের পরিবারের লোকজনকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি, বাড়ি-সংলগ্ন দোকানঘর ভাঙচুর করাসহ স্বর্ণালংকার, টাকা লুটপাট করা হয়েছে। বাঘা পৌরসভার ব্যবসায়ী আবির ইসলামকে মারধর করা হয়েছে। তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে আসবাব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন-পরবর্তী মোট ১৪টি হামলার বিবরণ ও ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরা হয়েছে। এসব ঘটনায় বাঘা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য ঘটনায় আদালতে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

সেলিম রেজা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে মর্মে আশ্বস্ত হয়ে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না, দলীয় পদ থেকে বাদ দেওয়া হবে না মর্মে দল থেকে বারবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি উপেক্ষা করে শাহরিয়ার আলম তাঁর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সাধারণ জনগণকে নির্যাতন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে মানুষ কোথায় আশ্রয় নেবেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি দয়া করে, শাহরিয়ার আলমকে অরাজকতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিন। দয়া করে আপনার প্রতি আস্থাশীল জনগণ ও নেতা-কর্মীদের রক্ষা করুন।’

আরও পড়ুন

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শাহরিয়ার আলমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সাইফুল ইসলাম বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের পর যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। একেবারে ব্যক্তিপর্যায়ের ঘটনা। এগুলোর সঙ্গে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের কোনো সম্পর্ক নেই।

এর আগে গত বুধবার স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে দুপুরের পর থেকে অনিয়ম হয়েছে। প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তারা নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহরিয়ার আলমের হয়ে কাজ করে তাঁকে হারিয়েছেন।