মানিকগঞ্জে জাগীর সেতুতে এক লেন দিয়ে চলছে যানবাহন, ভোগান্তি

এক লেনে সংস্কারকাজ চলায় অন্য লেন দিয়ে ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর সেতু এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাগীর সেতুর এক লেনের ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ কাজ চলছে। এক লেনে সংস্কারকাজ চলায় অন্য লেন দিয়ে ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। এতে সেতুর উভয় পাশে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনগুলো আটকে থাকতে হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে সেতু এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মানিকগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে সদর উপজেলার জাগীর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ সেতু এটি। কম্পনের কারণে সেতুর বিভিন্ন অংশের সম্প্রসারণ ও সংকোচন নিশ্চিত করতে সেতুর সংযোগস্থলে কিছুটা ফাঁকা রাখা হয়। দীর্ঘদিন সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচল করায় সেতুর বিভিন্ন অংশের সংযোগস্থলে ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ স্টিলের পাতগুলো বেঁকে গেছে। এতে সংযোগস্থলের ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করলে শব্দ হয় এবং ঝাঁকুনি লাগে।

সওজ সূত্র জানায়, সেতুটিতে মোট ১২টি এক্সপানশন জয়েন্ট আছে। সেগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। এসব জয়েন্টের ফাঁকা স্থানে নতুন করে স্টিলের পাত বসানো হচ্ছে। গত বুধবার থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে, চলবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর উত্তর পাশের লেনে এক্সপানশন জয়েন্টের পাত বসানোর কাজ করছেন শ্রমিকেরা। তিনটি এক্সপানশন জয়েন্টের উত্তর পাশের অংশে স্টিলের পাত বসিয়ে সিমেন্ট ও পাথরের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সেতুর উত্তর পাশের লেনের অন্যান্য এক্সপানশন জয়েন্টে নতুন স্টিলের পাত বসানের কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

সংস্কারকাজের কারণে সেতুর এক পাশে যানবাহনগুলোকে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য পাশের যানবাহনগুলোকে সেতুর দক্ষিণ পাশের লেন দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সেতুর দুই পাশে মানিকগঞ্জ ও ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় করে আটকে থাকতে হচ্ছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সেতুর উত্তর পাশের লেনে এক্সপানশন জয়েন্টের পাত বসানোর কাজ করছেন শ্রমিকেরা। শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর সেতু এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া থেকে ট্রাকে তুলা নিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকায় যাচ্ছিলেন চালক খোরশেদ আলম। সেতুর পশ্চিম প্রান্তে মহাসড়কে অপেক্ষায় থাকা খোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘১৫ মিনিটের মতো এখানে ব্রিজ (সেতু) পারাপারের অপেক্ষায় আছি। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হলে আমাগো জন্য ভালো।’

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীসেবা পরিবহনের যাত্রী আরাফাত হোসেন বলেন, সেতুটি পুরাতন ও দুই লেনের। একপাশে কাজ হওয়ায় এক লেন পুরোপুরি বন্ধ। এ কারণে অন্য পাশের লেন দিয়ে শুধু একমুখী যানবাহন পারাপার হতে পারছে। এতে অন্য পাশের যানবাহনগুলোকে সেতু এলাকায় আটকে থাকতে হচ্ছে।

সওজের মানিকগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল কাদের জিলানী প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো সেতুটির এক্সপানশন জয়েন্টগুলো ফাঁকা হওয়ায় যান চলাচলের সময় শব্দের পাশাপাশি ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহনের চাকার সমস্যাও হয়। সংস্কারকাজ চলায় সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচলে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা করেন।