ভোটকক্ষে ব্যালটে প্রকাশ্যে সিল মারলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটে সিল মারছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানছবি: সংগৃহীত

জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের একটি কেন্দ্রে গোপন কক্ষে না গিয়ে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাজাবাদ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

প্রকাশ্যে সিল দেওয়ার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন ফরিদুল হক খান। এরপর নেতা-কর্মীরা তাঁকে ব্যালট পেপার দেন। তিনি কালো কাপড়ে ঘেরা গোপন কক্ষে না গিয়ে ব্যালট বাক্সের পাশে ব্যালট পেপার রেখে নৌকা প্রতীকে ভোট দেন। এরপর তিনি ব্যালট পেপার ভাঁজ করে ব্যালট বাক্সে ফেলেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, দলীয় নেতা-কর্মী ও কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে কথা বলতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানকে বারবার ফোন দেওয়া হলে তাঁর ফোনটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।

সিরাজাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এই কেন্দ্রের ভোটার। তিনি সকাল ৯টার দিকে ভোট দিতে আসেন। তাঁর সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীরা ছিলেন। আমিও সেখানে ছিলাম। তিনি প্রকাশ্যে ভোট দেননি। তিনি ব্যালট বাক্সের পাশে ব্যালট রেখে সিল দিয়েছেন।’ এমন কাজ নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান।

আরও পড়ুনঃ

ভোটারবিহীন ও প্রশ্নবিদ্ধ আখ্যা দিয়ে যশোর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জন

নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর লাঙ্গলের প্রার্থীর ভোট বর্জন

আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে, এবারও সেটাই করা হচ্ছে: জি এম কাদের

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভোট দেওয়ার জন্য গোপন কক্ষ রয়েছে। একজন ভোটার প্রকাশ্যে ভোট দিতে পারেন না। এটি আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী প্রকাশ্যে সিল দেওয়ার ঘটনাটি আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে আমি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের মোট ভোটার ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯০৭ জন। এর মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার একজন। আর এই আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯২। আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন প্রার্থী।