সাতক্ষীরায় বিএনপির সব কমিটি গঠনের কার্যক্রম স্থগিত
সাতক্ষীরা জেলা কমিটির অধীন সব পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিএনপির কমিটি গঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী তাঁর ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে কমিটি কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন। আজ সৈয়দ ইফতেখার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের জেরে ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ কারণে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সৈয়দ ইফতেখার আলী তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘বিএনপি খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির অধীন সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সদস্য ফরম বিতরণ ও কমিটি গঠন কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করার জন্য দলের সব পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হলো।’
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, শ্যামনগর উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠন করা হয় ১৯ জানুয়ারি। পরে এ কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ২২ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ৪টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনি খাতুন ১৪৪ ধারা জারি করেন। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলীর অনুসারী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামের অনুসারীরা সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
একইভাবে কালীগঞ্জ উপজেলার তারালী ও চাম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয় ৭ জানুয়ারি। কমিটি গঠনের প্রতিবাদে ও পক্ষে ২৭ জানুয়ারি বিকেলে তারালী মোড়ে দুই পক্ষ কর্মসূচি দিলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল ১৪৪ ধারা জারি করেন। ১৪৪ ধারা জারির পরও সংঘর্ষ হয়। কেন্দ্রীয় নেতা শহিদুল আলমের অনুসারী ও সৈয়দ ইফতেখার আলীর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষে ১৫ আহত হন।
আশাশুনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বুধহাটা ইউনিয়নের সম্মেলন ডাকে ২৯ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বেউলা সাইক্লোন সেল্টারে। একই স্থানে শহীদুল আলমের অনুসারীরা কর্মী সভার আহ্বান করেন। সংঘর্ষ এড়াতে সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বেউলা ও তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধরা জারি করেন। ১৪৪ ধারি জারি থাকা অবস্থায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের ১৪ জন আহত হন। অপর পক্ষে ছিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলীর অনুসারী।
সাতক্ষীরার দেবহাটায় বিএনপির দুই পক্ষ গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটায় শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একই সময় নওয়াপাড়া ইউনিয়ন সম্মেলন ও কর্মী সমাবেশের ডাক দেয়। এই অবস্থায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কর্মসূচির স্থান ও এর আশপাশের এলাকায় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারি করেন।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির অধীন সব কমিটি গঠনের কার্যক্রম স্থগিত করার কারণ জানতে চাইলে জেলা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।