সখীপুরে মৃত সন্তান প্রসবের ৪৮ ঘণ্টা পর প্রসূতির মৃত্যু, ভাইয়ের দাবি হত্যা

মৃতের ভাই হত্যার অভিযোগ তুললে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গজারিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামেছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মৃত সন্তান প্রসবের ৪৮ ঘণ্টা পর নুরজাহান বেগম (৪৮) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৃতের ভাই বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

মৃতের ভাইয়ের অভিযোগ, সৎছেলেদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে তাঁর বোন ও গর্ভের সন্তান মারা গেছে। তবে অভিযুক্ত ছেলেরা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, সৎমায়ের সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হলেও কখনো শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নুরজাহান বেগম উপজেলার গজারিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবদুল জলিলের দ্বিতীয় স্ত্রী। জলিলের প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলেসন্তান আছে। চার বছর আগে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর নুরজাহান বেগমকে বিয়ে করেন আবদুল জলিল।

এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা নুরজাহান বেগমের প্রসববেদনা উঠলে তাঁকে গত শনিবার প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে ওই দিন রাতেই তিনি একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন। রোববার ওই প্রসূতিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরজাহান মারা যান। শেষ রাতে তাঁর লাশ সখীপুরে স্বামীর বাড়িতে আনা হয়।

মৃত নুরজাহানের ভাই নুর জামাল অভিযোগ করেন, নুরজাহানের গর্ভে ছেলেসন্তান আসায় সম্পত্তির অংশীদার হবেন সেই শঙ্কায় সৎছেলেরা এক মাস ধরে তাঁর বোনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এ জন্য গর্ভের সন্তানসহ তাঁর বোন মারা গেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে মৃত নুরজাহানের সৎছেলে মেহেদী হাসান বলেন, সৎমায়ের সঙ্গে তাঁদের মাঝেমধ্যে মনোমালিন্য ও কথা-কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু কখনো মারামারির পর্যায়ে যায়নি। তাঁরা মাকে কখনো শারীরিক বা মানসিক কোনো নির্যাতন করেননি।

সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রভাষ কুমার বসু প্রথম আলোকে বলেন, মৃতের ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।