বাঘা থেকে আমের প্রথম চালান গেল ফ্রান্স ও লন্ডনে

রাজশাহীর বাঘা থেকে প্রথম আমের চালান গেল ফ্রান্স ও লন্ডনে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কলিগ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীর বাঘা থেকে ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’-এর মাধ্যমে চাষ করা আমের প্রথম চালান আজ মঙ্গলবার ইউরোপের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। এই চালানে মোট দুই টন ক্ষীরশাপাতি আম পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এক টন আম ফ্রান্সে এবং এক টন আম লন্ডনে যাবে। শিল্পগোষ্ঠী স্কয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকে এই আম পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে নিরাপদ আম রপ্তানি করার লক্ষ্যে রপ্তানিকারক কোম্পানির সঙ্গে বাঘা উপজেলার ২১ চাষির চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ‘উত্তম কৃষি চর্চা’র মাধ্যমে আম চাষ করা হয়েছে। এ চর্চার অন্যতম মানদণ্ড হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত উৎপাদন, নিরাপদ ও খাদ্যমান রক্ষা, পরিবেশ সুরক্ষা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, কৃষিকর্মীর স্বাস্থ্য ইত্যাদি মেনে চলা। স্বাস্থ্যসম্মত উৎপাদনের মধ্যে রয়েছে সার, সেচ, বালাইনাশক প্রয়োগ ও ব্যবহারবিধি অনুসরণ, বীজ ও চারা রোপণ সামগ্রীর ব্যবহার, রাসায়নিকের পরিমিত ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা অবলম্বনে উৎপাদন নিশ্চিত করা। নিরাপদ ও খাদ্যমান রক্ষার মধ্যে রয়েছে ফসল সংগ্রহের পর সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থাপনা। এই ব্যবস্থাপনায় ২০১৬ সাল থেকে বাঘার আম বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

এ মৌসুমের প্রথম দিনে আজ উপজেলার কলিগ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান সাদি এন্টারপ্রাইজ থেকে ১ হাজার ৮০০ কেজি এবং বিদ্যুৎ হোসেন নামের এক চাষির বাগান থেকে ২০০ কেজি আম পাঠানো হলো।

ইউরোপে এ মৌসুমের প্রথম চালানে আজ মোট দুই টন ক্ষীরশাপাতি আম পাঠানো হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনে দুই টন আম পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ হোসেন নামের এক চাষির ২০০ কেজি, আর বাকি আম তাঁদের প্রতিষ্ঠানের। তিনি বলেন, গত বছর তাঁরা ৩৪ মেট্রিক টন বিদেশে রপ্তানি করেছেন।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্কয়ারের প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন বলেন, তাঁরা প্রথম দিনে বাঘা থেকে দুই টন আম নিয়েছেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এই আম নিয়ে গাড়ি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এই আমের এক টন ফ্রান্সে ও এক টন লন্ডনে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উত্তম কৃষিচর্চার মাধ্যমে চাষ করা আম দেখেশুনে তাঁরা এখান থেকে আমের সঙ্গে একটি প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছেন। তারপর ঢাকার শ্যামপুর প্যাকিং হাউস অ্যান্ড কোয়ারেন্টিন সেন্টার থেকে আরেকটি প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে। এরপর এই আম বিদেশে চলে যাবে। এ লক্ষ্যে তাঁরা শুরু থেকে কৃষকদের নিয়ে কাজ করেছেন। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও তদারকির কাজও করেছেন।