হাওরে ঘুরে ফেরার পথে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী যুবক নিহত

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মো. খাদেমুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুর থেকে ৯টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৯ যুবক সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। দুই দিনের ঘোরাঘুরি শেষে গতকাল বুধবার রাতে সবাই বাড়ি ফিরছিলেন। পথে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় তাঁদের একজন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৃষ্টিগড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই যুবকের নাম মো. খাদেমুল ইসলাম (৩০)। তিনি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার দুগাছি গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে। রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকায় মোটরসাইকেল সাড়াইয়ের গ্যারেজ পরিচালনা করতেন তিনি।

এদিকে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বেলাব উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের একজন কাভার্ড ভ্যানের চালক, অপরজন তাঁর সহকারী। তবে তাঁদের নাম–পরিচয় তাৎক্ষণিক জানতে পারেনি পুলিশ।

খাদেমুলের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেল আরোহী ও হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ভোরের দিকে মোটরসাইকেল আরোহী দলটি সৃষ্টিগড় এলাকা অতিক্রম করছিল। তাঁদের মধ্যে কেউ একটু আগে, কেউ একটু পরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ওভারটেক করতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী খাদেমুলকে চাপা দেয়। এতে তিনি মহাসড়কে ছিটকে পড়েন এবং তাঁর মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়।

মহাসড়কে টহলরত হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় খাদেমুলকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে ফাহাদ সারোয়ার নামের একজন জানান, গত সোমবার দুপুরে তাঁরা ৯ বন্ধু ৯টি মোটরসাইকেলে চড়ে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের দিকে রওনা হন। গত দুই দিন সেখানে সবাই মিলে খুবই হইচই করেন। ঘোরাঘুরি শেষে গতকাল রাত ৯টার দিকে তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। রাতে ভৈরবের একটি হোটেলে একসঙ্গে খেয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট পরই এ দুর্ঘটনা ঘটল।

ইটাখোলা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, ‘নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ঘটনা জানানো হয়েছে। তাঁরা এলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহত ব্যক্তির লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ড ভ্যান
ছবি: সংগৃহীত

হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দুটিই ভৈরবের দিকে যাচ্ছিল। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে খানাখন্দের কারণে ট্রাকটি গতি কমায়। এ সময় পেছনে থাকা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কাভার্ড ভ্যানটি সজোরে ট্রাকের পেছনের অংশে ধাক্কা দেয়। এতে ওই কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই চালক ও সহকারী নিহত হন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ভৈরব হাইওয়ে থানায় নিয়ে যায়।

ভৈরব হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক মো. ফখরুদ্দীন জানান, ‘নিহত দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁদের নাম-পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’