নারী নির্যাতন
প্রতীকী ছবি

সিলেটে স্ত্রীর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মানিকুল ইসলাম। তিনি হবিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সোমবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রাশিদা সঈদা খানম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মানিকুল ইসলাম ২০১৪ সালে এক নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাঁর স্ত্রী কানাডায় চলে যান। মানিকুল তাঁকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকেন। পরে মানিকুলের কানাডার ভিসার ব্যবস্থা করে দেন স্ত্রী। পরে মানিকুল কানাডায় যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে স্ত্রী অপারগতা জানালে মানিকুল তাঁকে নির্যাতন করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালে মানিকুলের স্ত্রী কানাডা থেকে দেশে ফেরেন। মানিকুল তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে তাঁর পাসপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড, পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার এবং পাঁচ হাজার কানাডীয় ডলার ছিনিয়ে নেন। পরে মানিকুল তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করেন। পরে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং নবীগঞ্জ থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।

ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত চাইলে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন ওই পুলিশ সদস্য। অবশেষে ২০২২ সালে এ ঘটনায় আদালতে  মামলা করেন মা‌নিকুলের স্ত্রী। ওই মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন মা‌নিকুল। জামিনের মেয়াদ শেষে সোমবার সিলেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পরে আদালতের বিচারক তাঁর জা‌মিন নামঞ্জুর করেন।

পিপি রাশিদা সাঈদা খানম বলেন, স্ত্রীর করা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের মামলায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পু‌লিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ খ‌লিলুর রহমান জানান, তি‌নি দা‌য়িত্ব পাওয়ার আগে মা‌নিকুল কর্মরত ছিলেন। তাঁর কাছে মানিকুলের বিষয়ে কোনো তথ‌্য নেই।

হ‌বিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ব‌দিউজ্জামানও বলেন, তিনি ঘটনার পরে এ থানায় যোগদান করেছেন। থানায় মা‌নিকুল ইস‌লাম নামের এক কর্মকর্তা ছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে কোথায় কর্মরত ছিলেন, সে‌টি তি‌নি জানেন না।

তবে জেলা পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মা‌নিকুলের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তাঁকে ব‌রিশাল পু‌লিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়ে‌ছিল।