পর্বতারোহী, বক্সার ও আয়রনম্যানসহ আট শতাধিক দৌড়বিদের অংশগ্রহণে শেরপুরে হাফ ম্যারাথন
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্ত সড়কে আজ শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত হলো দ্বিতীয় হাফ ম্যারাথন। ‘শেরপুর রানার্স কমিউনিটি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আট শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু অংশ নেন। পাহাড়ি পরিবেশে ১, ৫, ১০ ও ২১ কিলোমিটার—মোট চারটি ক্যাটাগরিতে দৌড় হয়।
উপজেলার রাংটিয়া স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে সকাল ছয়টায় ম্যারাথন শুরু হয়। সড়কের যান চলাচল বন্ধ রেখে পথের মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবকেরা পানি, স্যালাইন, খাবারসহ সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। জরুরি পরিস্থিতির জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থাও ছিল।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন দেশের বিখ্যাত কয়েকজন খেলোয়াড় ও অভিযাত্রী। ঢাকার দৌড়বিদ খায়রুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘নিয়মিত দৌড়াই, তাই সুস্থ আছি। দৌড়ালে ওষুধ খেতে হয় না।’ তিনি ১০ কিলোমিটারে দ্বিতীয় ও ৪৫ ঊর্ধ্ব গ্রুপে ২১ কিলোমিটারে সেরা হন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের ঢালে সীমান্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবকেরা ম্যারাথনে অংশ নেওয়া লোকদের জন্য পানি, স্যালাইন, হালকা খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। প্রয়োজনে তাঁদের কাছ থেকে সেগুলো নিচ্ছেন দৌড়ে অংশ নেওয়া লোকজন। জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত আছে।
২০২৪ সালে এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশি পর্বতারোহী ও চিকিৎসক বাবর আলী ম্যারাথনে অংশ নেন। তিনি বলেন, স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি চেষ্টা ও পরিশ্রম থাকতে হবে। সুস্থ থাকতে দৌড় জরুরি।
ডায়াবেটিস জয় করে আয়রনম্যান খ্যাতি পাওয়া শরীয়তপুরের আরিফুর রহমান বলেন, নিয়মিত ব্যায়ামই তাঁকে সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিয়েছে। ‘এখন আমি সবচেয়ে সুখী মানুষ।’
এশিয়ান বক্সিং ফেডারেশনের টাইটেলধারী দেশের প্রথম বেল্টপ্রাপ্ত পেশাদার বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা ২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিতে আগের রাতেই শেরপুরে আসেন। পাহাড়ি পরিবেশে দৌড়াতে পেরে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
শেরপুর রানার্স কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা আয়রনম্যান আল-আমিন সেলিম বলেন, ‘রানারদের বিশেষ করে তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চাই। শেরপুরকে তুলে ধরতে চাই।’
এই আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কারী রাজিয়া সামাদ জানান, প্রস্তুতি চলেছে এক মাস ধরে। পাহাড়ি নীরব পরিবেশে আয়োজন করায় সবারই দারুণ ভালো লেগেছে।
আয়োজনে এক কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেওয়া সবাইকে (শিশু) পুরস্কৃত করা হয়েছে। ৫ কিলোমিটারে মাফিয়া ইসলাম, রানা মিয়া; ১০ কিলোমিটারে রিক্তা দেবা, হৃদয় মিয়া এবং ২১ কিলোমিটারে ফাতেমা আনজুম ও মো. রহমান প্রথম হয়েছেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্থান অর্জনকারীদের অর্থ, সনদ, মেডেল, ক্রেস্টসহ বিভিন্ন উপহার দেওয়া হয়।