ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগরে লাব্বাইক পরিবহনের সাতটি বাস আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বাসে হেনস্তার অভিযোগে লাব্বাইক পরিবহনের সাতটি বাস আটক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের একদল শিক্ষার্থী বাসগুলো আটকাতে শুরু করেন। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাসগুলো থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে তাঁরা ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী চারুকলা বিভাগের ৪৯তম ব্যাচে অধ্যয়নরত। বাস আটককারী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ওই ছাত্রী লাব্বাইক বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। এ সময় চালকের সহকারীর (হেলপার) সঙ্গে হাফ ভাড়া নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় ওই ছাত্রীর। একপর্যায়ে বাসের ওই সহকারী ওই ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এই ঘটনার জেরে আজ দুপুরে তাঁরা লাব্বাইক বাসগুলো আটক করেন।
আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে লাব্বাইক পরিবহনের বাসগুলো রেখে চাবি নিয়ে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে চারুকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখা যায়।
বাসের সহকারী ওই ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এই ঘটনার জেরে আজ দুপুরে সহপাঠীরা লাব্বাইক বাসগুলো আটক করেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মুঠোফোন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল বিকেলে আমি ও আমার বান্ধবী বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। ভাড়া নিয়ে বাসের সহকারী খুবই খারাপ আচরণ করেন। তিনি পারলে আমাদের মেরে বসেন, এমন আচরণ করতে থাকেন। পরে আজ আমরা তাঁদেরকে বলেছি জাস্ট সরি বলতে। কিন্তু তাঁরা কেউ সরি বলেননি।’
লাব্বাইক পরিবহনের একটি বাসের সহকারী মো. শাওন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বাসটি ৩ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে সন্ধ্যাবেলা ছাড়া হয়েছে। সারা দিন বাস আটক রেখে তাঁদের মারধর করেছেন শিক্ষার্থীরা। আরেকটি বাসের চালক বিমল চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি বাস থেকে সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা নিয়েছেন। এর বাইরেও অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। যাঁর কাছ থেকে যত পেরেছেন, টাকা নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু হলেই বাস আটক করে, পরে টাকা নিয়ে বাসগুলো ছেড়ে দেবে, এতে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজ্জত নষ্ট হয়। আজ শুনেছি লাব্বাইক পরিবহনের এক সহকারীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ঝামেলা হয়। এর জেরে বাস আটক করেছে। আমি তখনই নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তা, সাভার হাইওয়ে থানার একজন কর্মকর্তা এবং তিনজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়েছিলাম। নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যার দিকে কয়েকটি বাস ছাড়া হয়েছে। আরও কয়েকটি বাস আছে, কিন্তু বাসের চালকদের তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না।’ প্রক্টর বলেন, ‘টাকাপয়সা নিয়েছে কি না, আমি জানি না। টাকা কারা নিয়েছে, আমাকে একটু তথ্য দিলে আমি এখনই ব্যবস্থা নেব।’