নওগাঁর জবইবিলে এবার পরিযায়ী পাখি কম এসেছে
নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবইবিলে এ বছর গত বছরের তুলনায় তিন হাজার পরিযায়ী পাখি কম এসেছে। জবইবিল জলাভূমিতে এ বছর সব মিলিয়ে ৬ হাজার ৬৯২টি পরিযায়ী পাখি এসেছে। গত বছর আসা পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৭১২। জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জবইবিলের পাখি জরিপ প্রকাশ উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে সংস্থাটির উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন। জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবীর, বন বিভাগ সাপাহার রেঞ্জের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) নওগাঁ জেলা কমিটির সভাপতি হেফজুল ইসলাম, জবইবিল মৎস্য সমবায় সমিতির দলনেতা মমতাজ উদ্দিন, জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার উপদেষ্টা খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।
জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থা এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ পাখিশুমারি চালায়। এ পাখিশুমারিতে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব সহযোগিতা করে। এই সময়ের মধ্যে ২৮ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিলে আসা পরিযায়ী পাখির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার পাতি-সরালি পাখি বিচরণ করে। পৃথিবীজুড়ে বিপন্ন লালমাথা পাতিভূতি হাঁস ৮০০টি ও চখাচখি পাখি ৬টি এ শুমারির সময় দেখা গেছে।
এ বছর বিলে পাখি কম আসার পেছনে বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করেন জবইবিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, বিলে অধিক পরিমাণ মাছ আহরণ, ইঞ্জিনচালিত নৌকার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল, বিলের জলে অত্যধিক গৃহপালিত হাঁসের অবাধ বিচরণ, পাখি শিকারিদের উৎপাত, অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহার, বিলের পাশে মিশ্র প্রজাতির গাছের অভাব, বিলসমৃদ্ধ এলাকার জনগণের মাঝে সচেতনতার অভাব এবং দর্শনার্থীদের উচ্চ স্বরে গান-বাজনা ও মাইক বাজানোর কারণে বিলে পাখির বিচরণ কমে গেছে।