সখীপুরে সেতুর সংযোগ সড়ক দ্রুত নির্মাণ করার দাবি

১৯৯৬ সালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

সখীপুরের সিলিমপুর গ্রামে সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকায় পাশেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছেছবি: প্রথম আলো

২৫ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও এখন পর্যন্ত দুই পাশে সংযোগসড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় মানুষেরা হেঁটে চলাচলের জন্য সেতু ঘেঁষে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছেন। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর খামারবাড়ির উত্তর পাশে এই সেতুর অবস্থান।

সেতুর দুই পাশে মাটি ফেলে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সেতুর দুই পাশে সড়ক নির্মাণ হওয়া খুবই প্রয়োজন। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদের সভায় কথা বলব।
আনসার আসিফ, ইউপি চেয়ারম্যান, দারিয়াপুর

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর খামারবাড়ি ও দেওবাড়ি এলাকার লোকজনের যাতায়াতের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন। এর পর থেকে ওই সেতু সেভাবেই পড়ে আছে। স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে হেঁটে চলাচলের জন্য প্রতিবছর এই স্থানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।

সরেজমিনে ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর খামারবাড়ির উত্তর-পশ্চিমে ধানখেতে ওই সেতুর অবস্থান। শালগ্রামপুর বাজারের ১০০ গজ পূর্বে পাকা সড়ক থেকে দক্ষিণ দিকে ধানখেতের আল ধরে ওই সেতুতে যেতে হয়। সেতুর চারপাশ ঘুরে কোথাও কোনো ফলক দেখা যায়নি। ফলে সেতুটি সরকারের কোন দপ্তর কত টাকায় নির্মাণ করেছিল, তা বোঝা যাচ্ছে না। এর দায়ও নিচ্ছে না কেউ।

সিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, মূলত কাদের সিদ্দিকীর খামারবাড়িতে যাওয়ার সুবিধার্থে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরত্ব তৈরি হওয়ায় ওই সেতুর দুই পাশে সড়ক নির্মিত হয়নি। সেতুটি সেই আগের অবস্থাতেই পড়ে আছে।

আমাদের অধিদপ্তর সড়কবিহীন সেতু নির্মাণ করে না। আমার ধারণা, সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে করা।
আবদুল বাছেদ, উপজেলা প্রকৌশলী

উপজেলার দেওবাড়ি গ্রামের আলহাজ মিয়া বলেন, ‘সহজ পথে হেঁটে যাওয়ার জন্য আমরা গ্রামবাসী প্রতিবছর সেতুর পশ্চিম পাশ ঘেঁষে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করি। সেতুর দুই পাশে সড়ক থাকলে আমরা যানবাহন নিয়ে সহজে গ্রামে যেতে পারতাম। এখন আমাদের যানবাহনযোগে গ্রামে যেতে হলে দুই কিলোমিটার ঘুরতে হয়।’

দারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সেতুর দুই পাশে সড়ক নির্মাণ হওয়া খুবই প্রয়োজন। এই সেতুর সংযোগসড়ক যাতে দ্রুত করা হয়, তা নিয়ে আমি উপজেলা পরিষদের সভায় কথা বলব।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) তাহমিনা চৌধুরী এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ বছরের তালিকায় সেতুটির নাম নেই। আমার মনে হয়, অন্য কোনো দপ্তরের।’

উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবদুল বাছেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অধিদপ্তর সড়কবিহীন কোনো সেতু নির্মাণ করে না। আমার ধারণা, সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে করা।’