পরিবারের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেটি চলে গেল সবার আগে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন তালুকদারছবি: সংগৃহীত।

পাঁচ ভাই ও দুই বোনের পরিবার। তার মধ্যে একমাত্র আল–আমিন তালুকদারের সুযোগ হয়েছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে গিয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল, পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের হাল ধরার। সেই স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়েই সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন তিনি।

আল-আমিনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার কর্ণপাড়া গ্রামে। গত মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন আল-আমিন। আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

পরিবার ও সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি এখনো। সময়টা পরিবারের সঙ্গে কাটাতে গত মাসেই মাদারীপুরে গিয়েছিলেন আল-আমিন। বড় ভাই নয়ন তালুকদারের মোটরসাইকেলে করে কাছেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঈদের উপহার নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল থেকে সড়কে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।

বড় ভাই নয়ন তালুকদার প্রথম আলোকে জানান, ঢাকায় নেওয়ার পর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ দেখে ওই দিনই আল-আমিনের অস্ত্রোপচার করা হয়। দুই দিন সেখানে থাকার পর আজ ভোরের দিকে মারা যান আল-আমিন। বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

ভাইয়ের স্বপ্নের কথা জানিয়ে নয়ন তালুকদার বলেন, ‘আল-আমিন আমাদের গ্রামের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একমাত্র শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবে, পরিবারের হাল ধরবে এমন স্বপ্ন ছিল তার। সবার অনেক আশা ছিল তাকে ঘিরে। পরিবারের কেউ তার অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। সবার কাছে আমার ভাই আর পরিবারের জন্য দোয়া চাচ্ছি।’