লক্ষাধিক ভোটে জয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের, জামানত হারাচ্ছেন সব প্রতিদ্বন্দ্বী

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তিনজনই জামানত হারিয়েছেন।

জয়ের প্রতিক্রিয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার মানুষের ভালোবাসায় আমি অভিভূত। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দুটি উপজেলার সব কটি ভোটকেন্দ্রে কাস্টিং ভোটের ৯২ ভাগ ভোট দিয়ে মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ভোটবিরোধীদের ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছেন হাওরের জনগণ। তাঁরা ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, উন্নয়নের পক্ষে তাঁদের অবস্থান।

মোট প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট যদি কোনো প্রার্থী না পান, সেই ক্ষেত্রে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সে হিসাবে এই আসনে তিনজন প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। তাঁরা হলেন—সাবেক সংসদ সদস্য তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শাহীনুর পাশা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী তৌফিক আলী ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী তালুকদার মকবুল হোসেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জগন্নাথপুর উপজেলার ৮৯টি ভোটকেন্দ্রে পেয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮৬ ভোট এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৫৬টি কেন্দ্রে পান ৬৬ হাজার ২০৯ ভোট। ২টি উপজেলা থেকে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৫ ভোট পেয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন। এ আসনের ১৪৫ কেন্দ্রের সব কটিতে তিনি বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আইনজীবী শাহীনুর পাশা চৌধুরী ১৪৫টি কেন্দ্রে সোনালী আঁশ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৫টি। তাঁর নিজ গ্রাম জগন্নাথপুর উপজেলার দিনাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও তিনি পরাজিত হন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী তৌফিক আলী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৪৫ ভোট। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী তালুকদার মকবুল হোসেন পেয়েছেন ৫১৪ ভোট।

জগন্নাথপুর উপজেলা নাগরিক ফোরামের নেতা বিজন কুমার দেব বলেন, ১৫ বছরে নির্বাচনী এলাকায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারায় পরিকল্পনামন্ত্রীর প্রতি মানুষের ভালোবাসার প্রকাশ এই ভোটবিপ্লব। অন্যদিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ছেড়ে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হওয়ায় শাহীনুর পাশা চৌধুরীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে ভোট দেননি লোকজন। তাই তিনি জামানত হারিয়েছেন। অপর দুই প্রার্থী নির্বাচনী এলাকায় অপরিচিত হওয়ায় জামানত হারান।

জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, বিশাল উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করায় জনগণ খুশি হয়ে তাঁকে (এম এ মান্নান) ভোট দিয়েছেন। এমনকি এবার তাঁর কাছ থেকে কোনো কেন্দ্র খরচ নেওয়া হয়নি। স্বপ্রণোদিত হয়ে ভালোবেসে দলীয় নেতা-কর্মীরা কেন্দ্র খরচ চালিয়েছেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম বলেন, এ আসনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। কোনো প্রার্থী লিখিত কোনো অভিযোগও দেননি।