তথ্য জানতে চাওয়ায় কারাদণ্ড, সাতক্ষীরায় জামিন পেলেন সাংবাদিক টিপু সুলতান

তালার সাংবাদিক টিপু সুলতানের মুক্তির দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রথমে মানববন্ধন ও পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পাওয়া কালের কণ্ঠের সাতক্ষীরার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতান জামিন পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

সাংবাদিকদের অভিযোগ, তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণকাজে অনিয়মের তথ্য জানতে চাওয়ায় তালায় কর্মরত কালের কণ্ঠের সাংবাদিক টিপু সুলতানকে অন্যায়ভাবে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে ‘সাংবাদিক সমাজ’-এর ব্যানারে সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকেরা আজ বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

আশেক-ই-এলাহির সভাপতিত্বে ও আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ ব্যানার্জি, আবুল কালাম আজাদ, আহম্মেদ আবু জাফর, রঘুনাথ খাঁ, মোশাররফ হোসেন, ইসরাফিল হোসেন, এস এম বিপ্লব হোসেন, শেখ ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে ভবন নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার তথ্য সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক টিপু সুলতান। তথ্য জানতে চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম তাঁকে ছাতা দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে টিপু নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রকৌশলী মামুনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। টিপু ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেলকে জানানোর আধা ঘণ্টা পর তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এসে প্রকৌশলী মামুন ও ঠিকাদারের নিয়োজিত লোকজনের মুখে একতরফা ঘটনা শুনে অন্যায়ভাবে সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন ইউএনও। ওই দিন বিকেলে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বক্তারা অবিলম্বে টিপুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে আজকের মধ্যে মুক্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে ইউএনও শেখ মো. রাসেল, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলমসহ হামলা ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকেরা সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি, সার্বিক) বিষ্ণুপদ পালের সঙ্গে দেখা করেন। এডিসি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে সাংবাদিক নেতাদের টিপু সুলতানের জামিনের জন্য আবেদন করতে বলেন। টিপুর পক্ষে আইনজীবী বদিউজ্জামান জামিন আবেদন করেন। বেলা দুইটার দিকে সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

পরে জামিনের আদেশ জেলখানায় পাঠানো হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তাঁকে জেলখানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। আইনজীবী খায়রুল বদিউজ্জামান এবং চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিক টিপুর জামিনে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।