ফলাফলনির্ভর মূল্যায়ন থেকে বেরিয়ে আসতেই নতুন কারিকুলাম: শিক্ষামন্ত্রী

রাজশাহীতে ৫২তম জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনের পর শিক্ষামন্ত্রীসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। বুধবার সকালে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামেছবি: প্রথম আলো

ফলাফলনির্ভর মূল্যায়ন থেকে বেরিয়ে আসতেই নতুন শিক্ষা কারিকুলাম করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বুধবার সকালে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ৫২তম জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ফলাফল দিয়ে কিন্তু সর্বজনীন মূল্যায়ন হয় না। এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই নতুন শিক্ষা কারিকুলাম করা হয়েছে। খেলাধুলা নতুন কারিকুলামের বিশাল একটি অংশ। অ্যাকটিভিটি লার্নিংয়ের মধ্য দিয়ে শিক্ষা অর্জন করবে। সেখানে খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুষ্ঠান শিক্ষা নগরীতে করতে পারায় তাঁরা গর্বিত বলে জানান মন্ত্রী।

সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রতিযোগিতাটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বেলুন ও ফেস্টুন ওড়ানো হয়। পরে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা উপভোগ করেন অতিথিরা।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবির, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অংশগ্রহণকারীর দিক থেকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় প্রতিযোগিতা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষায় রূপান্তরের কার্যক্রম চলমান। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। কর্মসংস্থান-সংশ্লিষ্ট সব দক্ষতা তাঁরা শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করবেন। এরই অংশ হিসেবে সারা দেশের ৭ লাখ ছাত্রছাত্রী আলাদা ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করছে।

মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। তিনি সার্বিকভাবে শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলার বিকাশ ও উন্নয়নে অনেক ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করেছেন। যার সুফল তাঁরা পাচ্ছেন। তাঁদের লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব খেলার মাঠ তৈরি করা।

রাজশাহীতে ৫২তম জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রীসহ অন্যরা। এরপর শিক্ষার্থীরা ডিসপ্লে পরিবেশনা করে
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনিসুর রহমান, পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. অলীউল আলম, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. হুমায়ুন কবির, ৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী মুহম্মদ মনিরুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকেরা জানান, জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর ব্যবস্থাপনায় ছয় দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতা শেষ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীদের আলাদা ইভেন্টে অ্যাথলেটিকস, দৌড়, বর্শানিক্ষেপ, দীর্ঘ লাফ, চাকতিনিক্ষেপ, গোলকনিক্ষেপ, দড়িলাফ, হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক ও দ্বৈত, সাইক্লিং ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।

আটটি ডিসিপ্লিনে সারা দেশের আট শতাধিক ছাত্রছাত্রী প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। চূড়ান্ত পর্বে চারটি অঞ্চলকে চারটি ফুলের নামে ভাগ করা হয়েছে। রাজশাহী ও দিনাজপুর ‘চাঁপা’ অঞ্চল; ঢাকা ও ময়মনসিংহ ‘পদ্ম’ অঞ্চল; চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা ‘বকুল’ অঞ্চল এবং খুলনা ও বরিশাল ‘গোলাপ’ অঞ্চল।