নাটোরে সংসদ সদস্য শহিদুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এই আদেশ দেন।

আদালতে ১ জুন হত্যা মামলাটি করেন বাগাতিপাড়া উপজেলার মাড়িয়া সরকার পাড়ার শাহানাজ পারভীন নামের এক নারী। বাদীর অভিযোগ, তিন বছর তিন মাস আগে তাঁর স্বামী আইয়ুব আলীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছেন সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন। মামলা দায়েরের দিনই মামলাটি গ্রহণ করেন আদালত; ১৫ জুন পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

সে মোতাবেক আজ দুপুরে মামলাটি শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। এ সময় আদালত বাদীকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি এত দিন পর কেন আদালতে এসে মামলা করছেন? জবাবে বাদী আদালতকে বলেন, ‘এত দিন কোনো উকিল আমার মামলা করে দিতে রাজি হননি।’ সেই সঙ্গে আদালত বাদীর কাছে তাঁর স্বামী অসুস্থ ছিলেন কি না, তা–ও জানতে চান। জবাবে বাদী বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার স্বামী সুস্থ ছিল।’ শুনানি শেষে আদালত মামলাটি তদন্ত করে আগামী ২৭ আগস্ট প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআই নাটোরের বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের নির্দেশে বাগাতিপাড়া উপজেলার মহিদুল ইসলাম (৩৬), মিজানুর রহমান (৩৬), মাইনুল ইসলাম (৩২) ও আবদুল মজিদ (৫৫) বাদীর স্বামী আইয়ুব আলীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে তাঁকে সংসদ সদস্যের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইয়ুব আলীকে দেনাদার সাব্যস্ত করে তাঁর কাছ থেকে লিখিত কাগজপত্র করে নেওয়ার হুকুম দেন সংসদ সদস্য। এতে আইয়ুব আলী আপত্তি করলে সংসদ সদস্য তাঁকে মারপিট করে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুকুম দেন।

মামলায় বলা হয়, সংসদ সদস্যের নির্দেশে অন্য আসামিরা আইয়ুব আলীকে মারপিট করেন। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাঁকে ভ্যানে করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আইয়ুব আলীর ছেলে সোহাগ আলী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে বলে।

বাদীর আইনজীবী মো. শাহ মুখদুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাদী একজন অসহায় মহিলা। ঘটনার পর থেকে তিনি চেষ্টা করেও একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেননি। পেশাগত দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি মামলার দায়িত্ব নিয়েছি। আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। বাদী আশা করে, তিনি নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন পাবেন।’