ঝিনাইদহে মনোনয়নপ্রত্যাশীর পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ব্যক্তিদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতার পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত হাবিবুর রহমান ওরফে রিপন (৪৩) আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক। গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

হাবিবুর রহমান মীনগ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। ঘটনার সময় রাশিদুর রহমান ও আমিনুর রহমান নামের দুজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাঁদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই সদর হাসপাতালে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের দেখতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল হাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে স্থানীয় মীনগ্রাম বাজারে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলাম ওরফে দুলালের একটি পোস্টার কে বা কারা ছিঁড়ে ফেলেন। এ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল হাই এবং নজরুল ইসলামের স্থানীয় সমর্থকদের মধ্যে বিবাদ চলছিল। গতকাল সন্ধ্যায় এবং রাতে কয়েক দফা বিরোধ মীমাংসায় বৈঠকও হয়, কিন্তু তা অমীমাংসিত থাকে।

হাসপাতালে আসা আহত দুজন বলেন, সংসদ সদস্য আবদুল হাইয়ের সমর্থক আবাইপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন মোটরসাইকেলে করে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। আবাইপুর বাজার পার হলেই প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা করে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক হাবিবুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক নাঈম সিদ্দিকী বলেন, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের শরীরে পেটানোর আঘাত বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। এ ছাড়া নিহত হাবিবুর রহমানের মাথায় বড় ধরনের আঘাত রয়েছে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।

হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের দেখতে এসে সংসদ সদস্য আবদুল হাই বলেন, ‘খুন মহাপাপ, এটা করা ঠিক হয়নি।’ তাঁর সমর্থক হাবিবুর রহমানকে যাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন, তাঁদের শাস্তি হোক, এটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ঢাকাতে আছি, শুধু শুনেছি একজন মারা গেছেন। তবে কী দিয়ে কী হয়েছে, তা বলতে পারছি না।’

এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমিত কুমার বর্মণ। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও আছেন, পরিস্থিতি যেন খারাপ না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা হচ্ছে।