পঞ্চগড়ে জন্মের দুই ঘণ্টা পর মৃত্যু জোড়া শিশুর

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জোড়া যমজের এক শিশুর জন্ম হয়। জন্মের দুই ঘণ্টা পর শিশুটির মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ে বুক ও পেট সংযুক্ত অবস্থায় একটি জোড়া শিশুর জন্ম হয়েছে। শিশুটির মাথা দুটি হলেও ঘাড়ের নিচ থেকে পুরো দেহ একজনের। হাত-পাও দুটি করে। জন্মের দুই ঘণ্টা পর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলেশিশুটির জন্ম হয়। পরে হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে (স্ক্যানু) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সোয়া একটার দিকে শিশুটি মারা যায়। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল কাশেম শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। শিশুটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার চা–শ্রমিক মাজেদুল ইসলাম ও সুরভী আক্তার দম্পতির প্রথম সন্তান।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আবু সায়েম বলেন, জোড়া শিশুটি জন্মের পরপরই শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। মায়ের পেটে ৪০ সপ্তাহের বেশি সময় থাকায় শিশুটি মায়ের পেটে ময়লা খেয়ে ফেলেছিল। এমনকি জন্মের পর কান্নাও দেরিতে করেছিল। জন্মের পর শিশুটির নাকে–মুখে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা দিয়ে স্ক্যানুতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় শিশুটিকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে সুরভী আক্তারকে হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। শিশুটির মায়ের পেটে ৪০ সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া শিশুটির জন্ম হয়। দুটি মাথা জোড়া লাগানো শিশুটির জন্মের পর নানা শারীরিক জটিলতা থাকায় চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণের জন্য শিশুটিকে নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। পরে সেখানেই মারা যায় শিশুটি।

শিশুটির বাবা মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সন্তান প্রসবের সময় পার হয়ে যাওয়ায় সিজার করাই। সিজারের আগে চিকিৎসক আলট্রাসনোগ্রাম করে জানিয়েছিলেন যে আমাদের যমজ সন্তান হবে।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) আমির হোসেন জানান, মূলত গর্ভধারণের সময় মায়ের পেটে দুটি ভ্রুণ আলাদা হয়নি। এ জন্য দুটি শিশুর শরীর একসঙ্গে জোড়া লেগে পৃথক দুটি মাথা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের জন্ম নেওয়া শিশুকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় কনজয়েনড টুইনস (Conjoined twins) বলা হয়।