আমরা বৃষ্টিবাদল বুঝি না, সব মৌসুমেই খেলা হবে: ওবায়দুল কাদের
আন্দোলনের নামে বিএনপি কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম ও লড়াই চালিয়ে যাব। আপনারা প্রস্তুত আছেন? আবারও খেলা হবে। আবারও খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। তৈরি আছেন? আমরা একসাথে খেলব। খেলা তো হবেই, খেলা হবে। আমরা বৃষ্টিবাদল বুঝি না, সব মৌসুমেই খেলা হবে।’
আজ বুধবার বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের ৭৫তম (প্লাটিনাম জয়ন্তী) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ।
বিএনপিকে ‘রাজনীতিতে বেপরোয়া চালক’ উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মনের জোর কমে গেছে, গলার জোর বেড়ে গেছে। বিএনপির নেতাদের মুখে কোনো ট্যাক্স নাই, তাদের মুখে কোনো লাগাম নাই। গাড়ির চালক বেপরোয়া হলে যে অবস্থা হয়, রাজনীতিতে বিএনপিও হচ্ছে বেপরোয়া চালক। কখন কোথায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে কেউ জানে না।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি কি চলে? না কেউ চালায়? কে চালায়? খালেদা জিয়া? বিএনপি চালায় লন্ডন থেকে রিমোট কন্ট্রোলে। আর সড়কপথে নয়, নদীপথে নয়, আকাশপথে বিএনপি চলে, আকাশপথে ডাক আসে। মধ্যরাতের ফরমান।’
বিএনপির নেতারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের দিনের আরাম, রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কখন তারেক রহমানের ডাক আসে, কখন কার চাকরি নট হয়ে যায় কেউ জানে না। ফখরুল সাহেবও শান্তিতে নাই। বড় বড় নেতা সবাই এখন আতঙ্কে আছেন। তারেক আতঙ্ক। তারেকের তো ডাক আসে মাঝরাতে। এই জন্য রাত হলে নেতারা আর ঘুমায় না। কখন যে কে যায়, আর কে আসে।’
বিএনপি কোটা ও শিক্ষক আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বলেও আলোচনা সভায় অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে গতবারও ছিল বিএনপি, এবারও আছে। এখন কোটা আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বিএনপি। কাজ হবে? আন্দোলন হবে? পরের ওপর নির্ভর করে আন্দোলন হয় না। কোনো দিনও হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা দিল্লি গেলেই বলে কিছুই আনতে পারেনি। কী আনবে? ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যা সমাধান করেছে। তাদের সাথে ২৫ বছরে মৈত্রী চুক্তি ছিল বলে সীমান্ত সমস্যা, ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। গঙ্গা নদীর পানি আমরা বুঝে পেয়েছি। গঙ্গার পানির হিস্যা বঙ্গবন্ধুকন্যা এনেছেন। তিস্তাসহ অভিন্ন পানির হিস্যা, বাংলাদেশের পানির হিস্যা শেখ হাসিনাই আনবে। কারও কথায় বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হবে না।’
একটা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৎ হলে, সচিব সৎ হলে ওই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিরা সৎ থাকলে দুর্নীতিবাজেরা পালিয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, সভাপতি ফারুক হাসান, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুর রহমান, ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মালেক প্রমুখ।