মতলবের বাজারগুলোয় ইলিশের আকাল, দাম চড়া

বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। তাই দাম চড়া। ফলে বিক্রি কম। হতাশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। সোমবার সকালে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর মাছবাজারেছবি: প্রথম আলো

মেঘনায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরও স্থানীয় মাছবাজারগুলোয় তেমন ইলিশ উঠছে না। কিছু ইলিশের দেখা মিললেও দামে মিলছে না। দাম চড়া হওয়ায় বেচাবিক্রিও খুব কম। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা হতাশ। এমনই চিত্র চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মাছবাজারগুলোতে।

আজ সোমবার সকালে মতলব উত্তর উপজেলার এনায়েতনগর, সুজাতপুর ও ছেংগারচর এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর, বরদিয়া আড়ং ও মুন্সীরহাট বাজারে দেখা যায়, সেখানে তেমন হারে ইলিশ নেই। যৎসামান্য কিছু ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দু–একজন মাছ বিক্রেতা। দাম চড়া হওয়ায় বেচাবিক্রি নেই তেমন। অধিকাংশ ক্রেতাই দরদাম করে ফিরে যাচ্ছেন। ইলিশের পরিবর্তে কিছুটা কম দামে অন্য মাছ কিনছেন তাঁরা।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের মাছ বিক্রেতা নাসির উদ্দিন ও বিমল চন্দ্র বলেন, মেঘনায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ১ মে। এর পর থেকে বাজারে তেমন হারে ইলিশ আসছে না। মাছবাজারে অন্যান্য বছর এ সময় প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন মণ ইলিশ উঠত। বিক্রিও হতো। দাম ছিল সহনীয় পর্যায়ে। এবার ভিন্ন চিত্র। এখন বাজারে প্রতিদিন ইলিশ আসে ২০–২৫ কেজি করে, তা–ও বিক্রি হয় না। চড়া দামের কারণে অধিকাংশ ক্রেতাই ইলিশ কিনছেন না। দরদাম করে চলে যাচ্ছেন।

মতলব উত্তর উপজেলার এনায়েতনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা পবিত্র দাস বলেন, কয়েক দিন ধরে এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। ইলিশের এই দাম অন্যান্য বছরের এ সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। দাম বেশি চড়া হওয়ায় বিক্রি খুব কম। এ কারণে তিনিসহ অন্য মাছ বিক্রেতারা হতাশ।

মেঘনায় প্রত্যাশিত হারে ইলিশ ধরা না পড়ায় ইলিশের এই অপ্রতুলতা চলছে বলে জানিয়েছেন একাধিক মৎস্য কর্মকর্তা। মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগমের ভাষ্য, বৃষ্টি কম হওয়ায় মেঘনায় পানির চাপ কম। এ কারণে তেমন হারে ইলিশ ধরা পড়ছে না। এর প্রভাব পড়ছে বাজারেও। বৃষ্টি হলে এবং মেঘনায় পানির চাপ বাড়লে প্রত্যাশিত হারে ইলিশ ধরা পড়বে। বাজারে ইলিশের আকাল থাকবে না তখন। দামও কমবে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার কলাদী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘গত তিন-চার দিন ধইরা ইলিশ কিনতে বাজারে যাইতাছি। কিছু ইলিশের দেখা মিললেও দামে মিলতেছে না। এলিগা ক্যাল মুলামুলি কইরাই চইলা আসি। এত দাম অইলে আমাগো মতো গরিব মাইনষের পাতে ইলিশ জুটব না। ইলিশ অইতাছে এহন বড় লোকদের মাছ। ইলিশ কিনতে না পাইরা হতাশ লাগতাছে।’