সাংবাদিক হত্যা মামলার আসামি বকশীগঞ্জ তাঁতী লীগের সভাপতি, পরে অব্যাহতি

জামালপুর জেলার মানচিত্র

জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার আসামি সহিদুর রহমান ওরফে লিপনকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি করা হয়েছিল। সমালোচনার মুখে তাঁকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সহিদুর রহমানের জায়গায় কমিটির সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে। জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও সদস্যসচিব মো. আরমান হোসেনের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি সহিদুর রহমান। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি জামিন পেয়ে এলাকায় আসেন। প্রথমে গত সোমবার জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন ও  সদস্যসচিব আরমান হোসেনের যৌথ স্বাক্ষরে আগামী ৩ বছরের জন্য সহিদুর রহমানকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি করে ৭১ সদস্যের একটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

সাংবাদিক হত্যা মামলার আসামিকে সভাপতি নির্বাচিত করার বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে বিকেলে তাঁকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

জামালপুর জেলা তাঁতী লীগের সদস্যসচিব আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুলক্রমেই নতুন কমিটিতে সহিদুর রহমানকে সভাপতি করা হয়েছিল। বিষয়টি আমরা টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। কমিটির কাগজটি ঠিকই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমরা যে তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি, তাঁর জায়গায় সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করেছি; সেই চিঠি আর কেউ ফেসবুকে দেয়নি। ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল।’

১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান (বরখাস্ত) মাহমুদুল আলমের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিলঘুষি ও বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

গোলাম রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি এবং একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৭ জুন দুপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলে রিফাতসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।