পঞ্চগড়ে শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের বাধা, পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে পাউবো কার্যালয়ের সামনে মহাসড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জেলার সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। মিছিল শুরুর আগে-পরে পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করলে সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেয় পুলিশ। বাধা উপেক্ষা করে প্রায় ১০০ গজ সামনে যাওয়ার পর পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ের সামনে মিছিলটি থামিয়ে দেয় পুলিশ। পরে মহাসড়কেই পুলিশবেষ্টনীর মধ্যে বেঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি। তাঁর বক্তব্যের পরপরই পুলিশের তাড়া খেয়ে সটকে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

মিছিল–পরবর্তী বক্তব্যে ফজলে রাব্বি বলেন, ‘সারা দেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনে গুলি চালিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেক মায়ের কোল খালি করা হয়েছে। সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত হওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত, বিচারসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেলা ১১টা থেকে শহরের জজকোর্ট এলাকার আশপাশে ও সদর হাসপাতালের আশপাশে কয়েকজন শিক্ষার্থী জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ওই এলাকায় আগে থেকেই পুলিশ টহল জোরদার করে। ওই এলাকায় দু-একজন করে আসা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে অনেককে চলেও যেতে দেখা যায়। এরই মধ্যে হঠাৎ ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী একত্র হয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে ব্যানার নিয়ে মিছিল শুরু করেন। এ সময় তাঁরা ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, নির্যাতন করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিলের আগে-পরে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ।

শিক্ষার্থীদের মিছিলকে কেন্দ্র করে পাঁচজনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের অভিভাবকদের ডেকে কথা বলা হবে। তাঁদের মধ্যে নেগেটিভ (নেতিবাচক) কিছু পাওয়া না গেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর নেগেটিভ কিছু পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।