কলাপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢুকে শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

হামলায় আহত মো. সজীব মৃধা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আজ সোমবার সকালেছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঢুকে এক শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলাপাড়া শহরের কুমারপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জখমের শিকার শ্রমিক লীগ নেতার নাম মো. সজীব মৃধা (৩৫)। তিনি কলাপাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সহসভাপতি। আহত সজীব মৃধা এ ঘটনার জন্য উপজেলা যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুল ইসলাম রকি ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জনি সরদারকে দায়ী করেছেন।

সজীব মৃধা অভিযোগ করেন, রকি ও জনি আগে থেকেই তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরা দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিববুর রহমানের নৌকা প্রতীকের সমর্থক। তবে তাঁকে কোনোভাবেই রকি ও জনি মানতে পারছিলেন না। তিনি দলীয় কার্যালয়ে গেলে তাঁকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হতো। তাঁর ওপর হামলা হতে পারে—এমন আশঙ্কার কথা দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও জানিয়েছিলেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল রাতে সজীব নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কাজ শেষ করে কুমারপট্টি এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে গেলে হঠাৎ হামলার শিকার হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সজীব মৃধা বলেন, ‘যখন রামদা নিয়ে ওরা আমার ওপর হামলা করেছে, তখন কার্যালয়ের ভেতরে অনেকেই উপস্থিত ছিল। তারা কেউই আমাকে বাঁচাতে চেষ্টা করেনি। রামদা-ছেনা দিয়ে ওরা আমাকে কুপিয়েছে। হামলাকারীরা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এ হামলায় রকি ও জনির সঙ্গে মুছা, সুমন, মহিবুল্লাহ, মোস্তফাসহ ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী জড়িত।’

ঘটনার পর থেকে রকি ও জনিসহ অন্যরা পলাতক থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদার বলেন, ‘গত রাতে আমি বাসায় আইয়া ১০টায় ঘুমাইয়া পড়ছিলাম। আমি কিছু জানি না। আজ সকালেই এ ঘটনা শুনলাম। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা নিয়া এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা খোঁজখবর নিয়া সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিমু।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সজীবের পিঠে ছুরি বা ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ডান পায়ের গোড়ালির ওপরে কোপের চিহ্ন আছে। পায়ের কোপের আঘাতটি গভীর এবং হাড় কেটে গেছে। হাড় কেটে যাওয়ায় তাঁর উন্নত চিকিৎসা দরকার। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন আছে। তিনি আরও বলেন, তাঁকে বরিশাল বা ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু তাঁর স্বজনদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আজ সোমবার সকালে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে টহলে থাকা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলের পাশ থেকে মেহেদী নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।