ঢল ও বৃষ্টিতে আবার পানি বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে

উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে আবারও নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের উকিলপাড়া এলাকার সুরমা নদীর 'রিভার ভিউ' থেকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে আবারও নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ৭ দশমিক ৮০ মিটারে ছিল। এটি এখানে বিপৎসীমা। এ ছাড়া জেলার ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় হালকা বৃষ্টি হলেও উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জে গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২১ মিলিমিটার, একই সময়ে চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ২৫৬ মিলিমিটার। যে কারণে উজানের ঢল নামছে। সুনামগঞ্জে এ বছর সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় ১ জুলাই, ৩৩২ মিলিমিটার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মাসের শেষ এবং চলতি মাসের শুরুর দিকের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের হাওরগুলো এখন পানিতে টইটম্বুর। এখন আবার বৃষ্টি ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামায় জেলার সুরমা, জাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি, কুশিয়ারা, চলতি, পাটলাই, চেলা, নলজুর, খাসিয়ামারা, কালনীসহ সব নদ–নদীর পানিই বাড়ছে। উজানের ঢলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়কের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। এতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটিই জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। এখানে লোকজন দুই দিন ধরে নৌকায় পারাপার হচ্ছে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া বলেন, পানি বাড়ছে। ঢল নামলেই শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়কের এই অংশটুকু নিচু হওয়ায় প্লাবিত হয়ে যায়। এতে জেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়ে তাহিরপুর উপজেলার মানুষ।

দোয়ারাবাজার উপজেলার নৈনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. আশিক মিয়া বলেন, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার চেলা ও খাসিয়ামারা নদীতে পানি বেড়েছে। তবে রাস্তাঘাটে পানি ওঠেনি।

সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, সুনামগঞ্জে স্বাভাবিক বৃষ্টি হচ্ছে। সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ঢল নামছে। এতে নদীর পানি বেড়েছে। তবে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সুনামগঞ্জে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হবে। নদীর পানিও কমে যাবে।

সুনামগঞ্জে গত বছরের জুনে ভয়াবহ বন্যা হয়। চার দিন সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল সুনামগঞ্জ।