আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গোপালগঞ্জে
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ গোপালগঞ্জে, ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বুধবার সকালে জেলা আবহাওয়া কার্যালয় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে। কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।
ফলে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়নি বেশির ভাগ মানুষ। এতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।
জেলা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ গোপালগঞ্জে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গতকাল বেলা দুইটার পর কিছু সময় সূর্যের দেখা মিললেও আজ সারা দিন সূর্যের দেখা মেলেনি।
জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে গোপালগঞ্জে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল এই তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত শনিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী আরও কয়েক দিন এমন তাপমাত্রা থাকতে পারে।
সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। গেটপাড়া এলাকায় কয়েকজন রিকশাচালককে আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহাতে দেখা যায়। হরিদাসপুর ও কারগাতি এলাকায় অল্প কয়েকজন কৃষক জরুরি প্রয়োজনে মাঠে নামলেও অধিকাংশ মাঠ ফাঁকা ছিল। পেট্রলপাম্প এলাকাগুলোয় হাতে গোনা কয়েকটি রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দূরপাল্লা ও আন্তজেলা বাস চলাচল করলেও যাত্রী ছিল কম।
গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট রোডের বাসচালক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সকালে তৃতীয় ট্রিপে মাত্র ৬ জন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়েছিল। রুট ঘুরে ফিরে মোট আয় হয়েছে মাত্র ৬০০ টাকা। তেলের টাকাও পুরো ওঠেনি।
তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের হরিদাসপুর বেদেপল্লি, চরমানিকদাহ ও ভেড়ার বাজার আশ্রয়ণ প্রকল্প, মাস্টারপাড়া ও গেটপাড়া এলাকার রিকশাচালক ও দিনমজুরেরা। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে শিশু ও বয়স্করা কষ্ট পাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জের কলবাগান মাস্টারপাড়া এলাকার রিকশাচালক মোশারফ হোসেন বলেন, সকালে রিকশা নিয়ে বের হলেও বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা আয় হয়েছে। যাত্রী না থাকায় আয় কমে গেছে। সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীত আরও বেশি লাগছে।
শীতের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ইব্রাহিম বলেন, তীব্র ঠান্ডায় নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে বহির্বিভাগে রোগীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।