আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগে রাকসুর জিএস আম্মারের আলটিমেটাম

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারছবি: সংগৃহীত

মেয়াদ শেষ হওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী-সমর্থিত ডিনদের আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ও ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের গ্রুপে পোস্ট দিয়ে এ কথা জানান তিনি। আওয়ামীপন্থী ডিনদের আগামীকাল শুক্রবার চেয়ারে দেখলে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও ‘বাকিটা বুঝিয়ে দেব’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ডিনদের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে উপাচার্য ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এসব ডিনদের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

দায়িত্বে থাকা আওয়ামীপন্থী ডিনরা হলেন আইন অনুষদের আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদে নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ, প্রকৌশল অনুষদে বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদে এ এইচ এম সেলিম রেজা।

ফেসবুক পোস্টে আম্মার লিখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী ডিনদের অপসারণ করানো হয় নাই। নির্বাচিত বলে পুরো দেড় বছর তাঁদের দায়িত্বে রেখেছে প্রশাসন। গতকাল ডিনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই ডিনদের আবার সময় বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। হুঁশিয়ারি জানিয়ে আম্মার লিখেছেন, ‘আজ সময় দিলাম রিজাইন দেওয়ার জন্য সম্মানের সাথে। আগামীকাল অফিসে গিয়ে বাকিটা বুঝিয়ে দেব।’

তবে আওয়ামীপন্থী ডিনরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ডিনরা কিংবা উপাচার্য সেই দায়িত্ব পালন করেন। এটা নির্বাচিত পদ। এই পদ থেকে পদত্যাগের সুযোগ তাঁদের নেই। ফলে ইচ্ছা করলেই তাঁরা পদত্যাগ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে উপাচার্যকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে যেহেতু আমাদের মেয়াদ গতকাল শেষ হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে এই পদে থাকার ইচ্ছা নাই।’

সালাহউদ্দিন আম্মারের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে এক্রাম উল্লাহ বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার পদত্যাগের কোনো অধিকার নেই। উপাচার্য যেহেতু দায়িত্ব দিয়েছেন, উপাচার্যকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি চাইলে আরেকটি চিঠি ইস্যু করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।’

হুমকির বিষয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধিকর্তা এ এস এম কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের এ ধরনের কথা বলা ঠিক না। উনি (আম্মার) উপাচার্যকে এ বিষয়ে নির্বাচন দেওয়ার জন্য বলতে পারেন।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীবের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।