ঘন কুয়াশায় মাঝপদ্মায় আটকে ছিল ৫টি ফেরি

ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ ছিল
ফাইল ছবি

ঘন কুয়াশার কারণে আজ মঙ্গলবার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ছয় ঘণ্টা বন্ধের পর ফেরি চলাচল শুরু হয়। একই কারণে সাত ঘণ্টার মতো বন্ধের পর আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চালু হয়। পদ্মা নদীর এই দুই নৌপথে ছোট-বড় মিলে পাঁচটি ফেরি মাঝনদীতে আটকে পড়ে। দুর্ভোগের শিকার হন বহু মানুষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, চলতি শীত মৌসুমে ১৩ দিন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। মধ্যরাত থেকে শুরু করে পরের দিন অনেক বেলা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ থাকছে। এ কারণে দুই রুটের সব কটি ঘাটে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি আটকে থাকছে।

সংস্থাটি জানায়, গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে এই দুই রুটে ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে আরিচা ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া নামের দুটি ফেরি মাঝনদীতে এবং বাকি তিনটি ফেরি শাহ আলী, এনায়েতপুরী ও কুঞ্জলতা আরিচা ঘাটেই যানবাহন লোড নিয়ে নোঙর করে থাকে। আজ সকাল সাড়ে নয়টার পর কুয়াশা কমলে সাত ঘণ্টার মতো বন্ধের পর ফেরি চালু হয়। এ সময় উভয় ঘাটে বেশ কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।

এদিকে কুয়াশার কারণে গতকাল মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা অতিমাত্রায় পড়তে থাকলে দুর্ঘটনা এড়াতে সাড়ে তিনটা থেকে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো ফেরি কেরামত আলী এবং ইউটিলিটি ফেরি মাধবীলতা ও কুমিল্লা মাঝনদীতে আটকে পড়ে। এসব ফেরিতে ৪০টির মতো যানবাহন ও দুই শতাধিক যাত্রী, যানবাহনচালক তীব্র শীত আর কুয়াশায় দুর্ভোগের শিকার হন।
এ সময় বাধ্য হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, রুহুল আমিন, ইউটিলিটি ফেরি বনলতা, রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা, চন্দ্রমল্লিকা ও ফরিদপুর নামক আটটি ফেরি নোঙর করে থাকে। পাটুরিয়া ঘাটে শাহ জালাল, শাহ পরান ও শাহ মখদুম নামের তিনটি রো রো ফেরি নোঙরে থাকে। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুয়াশা কমলে ফেরি চালু হয়। এ সময় দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে বেশ কিছু গাড়ি আটকে পড়ে। এর মধ্যে পণ্যবাহী ও দূরপাল্লার পরিবহন ছিল।

ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী আজগর শেখ বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে থাকায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। এর ভেতর ফেরিসহ অন্যান্য নৌযান চলতে থাকে। পরে রাত তিনটার পর থেকে অতিরিক্ত কুয়াশা পড়লে ঘাট থেকে আর কোনো ফেরি ছাড়েনি।

রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের প্রধান মাস্টার রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘হালকা কুয়াশায়ও ঝুঁকি নিয়ে অনেক সময় ফেরি চালাই। ভারী কুয়াশা পড়লে ফেরি চালানো অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। একটি ফেরিতে অনেক ধরনের যানবাহন, যাত্রী থাকে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতেই ঘন কুয়াশার মধ্যে ফেরি বন্ধ রাখা হয়।’

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই। সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ঘাটে কোনো ধরনের যানবাহন বা যাত্রী আটকে না থাকুক। যখন কুয়াশার কারণে সামান্য দূরের কিছুই দেখা যায় না, তখন বাধ্য হয়ে ফেরি বন্ধ করে দিতে হয়। চলতি মৌসুমে ১৩তম দিনের মতো কুয়াশায় এই দুই রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।’