খুলনা-১ আসনে বাদ হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস, নৌকার হাল ধরছেন ননী গোপাল

ননী গোপাল মণ্ডল (বাঁয়ে) ও পঞ্চানন বিশ্বাস
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল।

আরও পড়ুন

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৩০০ সংসদীয় আসনে দল মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। খুলনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ননী গোপাল মণ্ডলের নাম ঘোষণা করা হয়।

নৌকার টিকিট পাওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ননী গোপাল মণ্ডল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ সালাহউদ্দীন জুয়েল ও শেখ সোহেল উদ্দীনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘দাকোপ-বটিয়াঘাটার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। দলের সবাইকে নিয়ে নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করব। দাকোপ-বটিয়াঘাটার আরও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিরলস কাজ করে যাব।’

আরও পড়ুন

মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে পঞ্চানন বিশ্বাসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১। এলাকাটি হিন্দু সম্প্রদায়-অধ্যুষিত। ফলে বরাবরই আসনটি আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, খুলনার অপর পাঁচটি আসন সময়ে সময়ে বিভিন্ন হাতে পড়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকেই খুলনা-১ নিরাপদ। গত ছয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা খুলনা-১ আসনে জয়ী হয়েছিলেন। পরে শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ। পঞ্চানন বিশ্বাস ওই উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেলিভিশন প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। পরে পঞ্চানন আবার আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

পঞ্চানন বিশ্বাস ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। ওইবার ৭৮ হাজার ৫৫২ ভোট পেয়ে বিএনপি জোটের প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ওই নির্বাচনে খুলনা জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি একাই জিতেছিলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ননী গোপাল ১ লাখ ২০ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে  জয়ী হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ননী গোপাল দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চাকা মার্কায় নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে ননী গোপাল হেরে যান। পরে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পঞ্চানন ৬৬ হাজার ৯০৪  ভোট পেয়ে জয়ী হন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ননী গোপাল মণ্ডল ৩৪ হাজার ৫২৭ ভোট পান।

এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে পঞ্চানন বিশ্বাস বিএনপির আমীর এজাজ খানকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ মনোনীত হন।