জঙ্গলের ভেতর কাঁদছিল কাপড়ে মোড়ানো নবজাতক

জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক। মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

জঙ্গলের ভেতরে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় কাঁদছিল একটি নবজাতক। কান্না শুনে এক নারী ওই নবজাতককে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নবজাতকটি রাখা হয়েছে। হাসপাতালের নার্সরা তার সেবা দিচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম নবজাতকের চিকিৎসাসহ সব ধরনের সেবা নিশ্চিতের দায়িত্ব নিয়েছেন।

হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুল হাসিব বলেন, দুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। নবজাতকটির পোশাক থেকে শুরু করে সবকিছু দেওয়া হচ্ছে। তার চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে দহকুলা থেকে শাহারা খাতুন নামের এক নারী একটি নবজাতক নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। বাড়ির পাশে জঙ্গলের ভেতর তিনি নবজাতকটি পেয়েছেন। আশপাশে কাউকে না পেয়ে দ্রুত ওই নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

নবজাতকটি হাসপাতালে আনার সময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ইকবাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক দিনের নবজাতক মনে হচ্ছে। শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো। তারপরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েক দিন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

শাহারা খাতুন দহকুলা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বেলা দুইটার দিকে কয়েকটি শিশু বাড়ির পাশে খেলছিল। তারা বাড়িতে এসে জানায়, জঙ্গলের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ আসছে। এরপর তিনি দ্রুত জঙ্গলে গিয়ে দেখেন, কাপড়ে জড়ানো অবস্থায় এক কন্যা নবজাতক কাঁদছে এবং মাটিতে হাত-পা ছুড়ছে। দ্রুত তাকে কোলে নিয়ে বাড়িতে আসেন এবং এক নারীর দুধ পান করান। এলাকায় ভিড় বেড়ে গেলে দ্রুত তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, নবজাতকটি স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করছে। শিশু ওয়ার্ডের নার্সরা তাকে যত্নে রেখেছেন। তাকে ফিডারে করে দুধ খাওয়াচ্ছেন এক নার্স। শিশুটির পাশে শাহারা খাতুনও ছিলেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির সব রকম সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার সেবাযত্নে যাতে কোনো ত্রুটি না হয়, সে ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।