কুষ্টিয়ায় ডাকাতি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ১০ বছরের কারাদণ্ড
কুষ্টিয়ার চৌড়হাস এলাকায় একটি বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় করা মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাকির হোসেনসহ নয়জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রফিকুল ইসলাম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির মামলাটি মূলত আন্তজেলা ডাকাত দলের সংঘটিত একটি ডাকাতির ঘটনা ছিল। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১২ জনের মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের প্রত্যেককে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন চৌড়হাস উপজেলা রোডের বাসিন্দা সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জাকির হোসেন (৪৬), একই এলাকার বাসিন্দা উল্লাস (৪০), তৈমুর ইসলাম ওরফে বিপুল (৩৯), রফিকুল ইসলাম (পলাতক), মনির হোসেন ওরফে পিচ্ছি মনির (বন্দুকযুদ্ধে নিহত), সাগর ওরফে জাহাঙ্গীর (পলাতক), আনার ওরফে আনোয়ার (বন্দুকযুদ্ধে নিহত), মধু শিকদার (পলাতক) ও সাত্তার ওরফে মশিউর রহমান (পলাতক)। একই সঙ্গে মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সুমন, রবিউল ইসলাম, ছলেমান ওরফে রানা ও সোহেল রানা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২১ জুলাই রাত ১১টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতি মিয়ার রেল গেট এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে বাড়ির সব সদস্যকে জড়ো করে দড়ি দিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে লকারের চাবি ছিনিয়ে নেয় ডাকাত দল। লকারে রক্ষিত প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে তাঁরা পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত দল মালামাল নিয়ে যাওয়ার পর বাড়ির লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় গৃহকত্রী বেগম ফরিদা ইসলাম পরদিন ২২ জুলাই কুষ্টিয়া সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক হারাধন কুন্ডু ২০১১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে তিনজন দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে আদালতে বক্তব্য দেন।
জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী বলেন, ‘শুনেছি, ডাকাতির মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার সাজা হয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’