৭ তলা থেকে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে আটকা কিশোর, উদ্ধার করল ফায়ার সার্ভিস

আটকা পড়া কিশোরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খৈয়াসার এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

সাততলা ভবনের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামতে চেয়েছিল ১৩ বছরের কিশোরটি। কিন্তু ছয়তলায় এসে আটকা পড়ে সে। এরপর আর সে নামতে পারছিল না। বিষয়টি দেখে স্থানীয় একজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করে সাহায্য চান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের খৈয়াসার এলাকার সালমা সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসায় গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই কিশোর মাদ্রাসাটির ছাত্র। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালের দিকে ওই কিশোর মাদ্রাসা ভবনের সাততলার ছাদে ওঠে। এরপর সে ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। ছয়তলা পর্যন্ত পৌঁছে আটকে যায়। একটা পর্যায়ে আর নিচে নামতে পারছিল না। এর মধ্যে ভবনের বাইরের লোকজন এ দৃশ্য দেখে মাদ্রাসায় এসে বিষয়টি জানান। তখন মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা ভবনের ছাদে গিয়ে ওই কিশোরকে আটকে থাকতে দেখেন। এরপর মাদ্রাসা থেকে প্রথমে ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে সাহায্য চাওয়া হয়।পরে জেলা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক নিউটন দাসের নেতৃত্বে একটি দল খৈয়াসার এলাকায় পৌঁছায়। ফায়ার ফাইটার আলমগীর হোসেন ছয়তলা পর্যন্ত উঠে পাইপ থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে নিচে নামান।

আটকা পড়া কিশোরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খৈয়াসার এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফ নেওয়াজ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নাজমুল আলম ও সদর থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা ওই কিশোরকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

সালমা সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ বায়েজিদ আহমেদ জানান, ভবনের সপ্তম তলায় মাদ্রাসা। সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন ওই ছাত্র ছাদে ওঠে। একপর্যায়ে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তাকে উদ্ধারের পর বিষয়টি পরিবারকে জানানো হয়। পরে বিকেল চারটায় পুলিশ সদস্যদের সামনেই মায়ের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। মা তাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ওই কিশোরের বাড়ি সরাইল উপজেলায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশনমাস্টার মো. নাজমুল আলম বলেন, খবর পেয়ে বেলা ১১টা ৩ মিনিটে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ষষ্ঠ তলার পাইপে মাদ্রাসাছাত্রকে আটকে থাকতে দেখেন। দীর্ঘ পৌনে এক ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ওই মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।