বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ঠেকাতে এককাট্টা 

বিরইনতলা বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এলজিইডির উদ্যোগে গত বছরে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

মৌলভীবাজার জেলার মানচিত্র

বছরখানেক আগে বিদ্যালয়ের নতুন একতলা পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ সময় এলাকাবাসীর চোখে কাজে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। তাঁরা কাজে বাধা দেন। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা তা শুধরে নেন। এরপর আরও কয়েক দফা অনিয়ম ধরা পড়ে। তখনও এলাকাবাসী তা ঠেকাতে এককাট্টা হন। ঘটনাটি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বিরইনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিরইনতলা বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এলজিইডির উদ্যোগে গত বছরে ‘প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি-৪)’ আওতায় ওই প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ কাজে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭২ লাখ টাকা। সাইফুল ইসলাম নামের মৌলভীবাজার জেলা সদরের এক ঠিকাদার কাজটি পান। চলতি ২০২২ সালের জুন মাসে কাজ সম্পন্নের কথা ছিল। কিন্তু এ সময়ে তা সম্পন্ন হয়নি। এরপর ঠিকাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছরের (২০২৩) মার্চ মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

সরেজমিনে গত ১৮ নভেম্বর সকালে দেখা যায়, ভবনের নির্মাণকাজ শেষের পথে। ভবনের ছাদের অর্ধেকে জলছাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হালকা আঘাতে তা উঠে যাচ্ছে। ভবনের বারান্দার ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের দেয়ালের পলেস্তারারও একই অবস্থা। সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো শ্রমিককে পাওয়া যায়নি। 

বিরইনতলা গ্রামের বাসিন্দা ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য দছির মিয়া ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক দাতাসদস্য জালাল আহমদ বলেন, ভবনের ভিত্তি নির্মাণের সময় ১৫টি খুঁটির নিচে ৩ ইঞ্চির বদলে প্রথমে ১ ইঞ্চি সিসি (সিমেন্ট-কংক্রিট) ঢালাই দেওয়া হয়েছিল। রডও কম দেওয়া হয়েছিল। বাধা দেওয়ার পর পুনরায় ঠিকভাবে কাজ করা হয়। ছাদের ঢালাই সঠিকভাবে হয়নি। এতে বৃষ্টিতে শ্রেণিকক্ষের ভেতর একটি স্থানে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ত। সেটা ধরিয়ে দিলে ওই স্থান পলেস্তারা করে দেওয়া হয়। ভবনের বারান্দার ছাদ ও শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে পলেস্তারায় সিমেন্ট কম দেওয়ায় হালকা আঘাতে তা খসে যায়। 

কাজটি তদারকের দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ওহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, কাজে কিছু ত্রুটি হয়েছিল। ঠিকাদার কিছু মেরামত করেছেন। বাকিটাও মেরামত করে দেবেন। 

উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমদ ভূঁইয়া বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজে অনিয়ম ঠেকাতে এলাকাবাসী বেশ তৎপর। অভিযোগ পেয়ে কয়েক মাস আগে তাঁরা গিয়ে কাজ মানসম্মত হয়নি দেখেছেন। কাজ সম্পন্নের পর আবার দেখে তাঁরা প্রতিবেদন দেবেন। 

ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম বলেন, কাজে যেসব স্থানে ত্রুটি হয়েছে, তা মেরামত করা হচ্ছে। জলছাদও ভেঙে আবার নতুন করে দেওয়া হচ্ছে।