কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহতের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

কুমিল্লা জেলার মানচিত্র

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙা ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকার হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই টিটু সরকার বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে মেঘনা থানায় মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে কুমিল্লা জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেঘনা উপজেলা) মো. আবদুল কাইয়ুমকে। মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন রাতে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যার ঘটনায় গত দুই দিনে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল কাইয়ুমের বাবা আবদুল কাদির, কাইয়ুমের ভাই মো. দাইয়ান, মো. আরিফ ও মো. সোহেল। তাঁরা সবাই চালিভাঙা এলাকার বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোমবার ভোর ছয়টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য ও চালিভাঙা এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাইয়ুম। এ সময়ে কাইয়ুমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একদল নেতা-কর্মী দা ও টেঁটা নিয়ে চালিভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হুমায়ুন কবিরের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এ সময়ে বুকের বাঁ পাশে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে মারা যান চেয়ারম্যান হুমায়ুনের ছোট ভাই ও চালিভাঙা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকার। এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ৩০ জন।

ঘটনার পর থেকে জেলা পরিষদের সদস্য আবদুল কাইয়ুম পলাতক। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

মেঘনা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলায় গত দুই দিনে মেঘনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা সবাই এজাহারভুক্ত আসামি। প্রধান আসামি কাইয়ুম গা ঢাকা দেওয়ায় এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা সম্প্রতি কুমিল্লা-২ সংসদীয় আসনে যুক্ত হয়েছে। এর পর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা চালান জেলা পরিষদ সদস্য মো. আবদুল কাইয়ুম। কাইয়ুম কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদের অনুসারী। তবে চালিভাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সংসদ সদস্যের পক্ষের লোক নন। আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কাইয়ুম ও হুমায়ুন পক্ষ। এ সময় কাইয়ুম পক্ষের লোকজনের আঘাতে নিজাম সরকার গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।