ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে ভোটের শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জন করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান (কাঁচি প্রতীক) নির্বাচন বর্জন করেছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে ফিরোজুর রহমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এই আসনে নৌকার প্রার্থী টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

ফেসবুক লাইভে ফিরোজুর রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচন আমি বর্জন করলাম। ভোট গ্রহণ ও ফলাফল বন্ধ করে এই আসনে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করছি। আপনারা দেখেছেন, আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল সুষ্ঠু-সুন্দর একটি নির্বাচন হবে। আমাদেরকে সবাই সহযোগিতা করবে। কেউ সহযোগিতা করে নাই। এটা কী একটা খেলা খেলল, আমরা বুঝতে পারি নাই। আমাদেরকে মাঠে নামিয়ে দিয়ে তারা তাদের কাজ করেছে। আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ঘৃণাভরে এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করছি। জেলা প্রশাসকের কাছে নির্বাচন স্থগিত করার জন্য দরখাস্ত করেছি। তিনি করেন নাই। আমি আপনাদের মাধ্যমে এই নির্বাচনকে স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি অনুরোধ রাখলাম। নইলে জাতির জন্য বিরাট কলঙ্ক হয়ে যাবে।’

ফিরোজুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘এমন কোনো জায়গা নেই, কোথাও আমরা দাঁড়াতে পারি নাই। আমাদের লোকজনকে মারধর করে বের করে দিয়েছে। প্রশাসন বলেছেন ওনারা সহযোগিতা করবেন। ওনারা কিছুই করেন নাই। আমার এই জীবনে ১৪টি সংসদীয় নির্বাচন আমি দেখলাম। ছি, এমন নির্বাচন দিবে এটা ভাবতেও পারি নাই। মানুষ নেতা হতে চায়, এমন জঘন্যভাবে নেতা হতে চায়, তা ভাষায় ব্যাখ্যা করার মতো না। যেখানে অভিযোগ করেছি, কোনো সাড়া পাইনি। আমাদের লোকজন ও এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। ব্যালটের পুরো মুড়ি ছাড়িয়ে ফেলেছে। এভাবে যদি জনপ্রতিনিধি হয়, তাদের কাছে থেকে জাতি কি আশা করতে পারে।’

ফিরোজুর বলেন, ‘সকাল থেকে আমার লোকজন, এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয় নাই। বের করে দিয়েছে। জায়গায় জায়গায় জাল ভোট দিয়েছে। ভোটারদের বাড়ি গিয়ে বাধা দিয়েছে। অভিযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি। এসব প্রতিহতে কোনো অ্যাকশন আমি দেখলাম না। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে বিশ্বাস করেছিলাম যে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে। এমন নির্বাচন আর দেখি নাই কোথাও।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে সন্ধ্যার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে দুপুরে জেলা শহরের সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন ভোটকেন্দ্রে তিনি বলেন, ‘শহরের কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেছি। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা দেখিনি এবং এ ধরনের কোনো খবর পাইনি। তবে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল।’