ফরিদপুরে কর্মিসভা চলাকালে গ্রেপ্তার হলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি

ফরিদপুরে ছাত্রদলের কর্মিসভা চলাকালে গ্রেপ্তার হন জেলা ছাত্রদল সভাপতি আদনান হোসেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পৌর মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরে ছাত্রদলের কর্মিসভা চলাকালে জেলা ছাত্রদল সভাপতি আদনান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শহরের গোয়ালচামট এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পৌর মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ২০২২ সালের ৪ জুলাই ফরিদপুর সদরের বায়তুল আমান এলাকায় সবুজ মোল্লা (২৮) নামের এক তরুণকে হত্যা করা হয়। ওই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি আদনান হোসেন। তাঁকে ওই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফরিদপুর বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পৌর মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে ফরিদপুর মহানগর ছাত্রদল ও বিকেলে জেলা ছাত্রদলের কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলের সভায় সভাপতিত্ব করার কথা ছিল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আদনান হোসেনের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল চারটার কিছুক্ষণ পর আনদান হোসেন মিলনায়তনে এসে ঢুকলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ তা ঘিরে ফেলে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আদনান হোসেনকে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জেলা বিএনপির নেতারা বাধা দেন। এ সময় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়ার সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদ হয়। তবে পরে পুলিশ সদস্যরা আদনানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া বলেন, পুলিশ  জানিয়েছে আদনান একটি হত্যা মামলার আসামি। তবে পুলিশ তাঁদের কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে পারেনি। পুলিশ চাইলে অন্য জায়গা থেকেও আদনানকে গ্রেপ্তার করতে পারত। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কর্মিসভা থেকে আদনানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাতে জেলা ছাত্রদলের আয়োজন বাধাগ্রস্ত হয়।

আদনান হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

থানা-পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাতে ফরিদপুর পৌরসভার এ এফ মজিবর রহমান সড়কে বায়তুল আমান বটতলা এলাকায় মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা সবুজ মোল্লাকে কুপিয়ে হত্যা করে। হামলাকারীরা সবুজের বাঁ হাত কনুইয়ের নিচ থেকে কেটে নিয়ে যায়। ৬ জুলাই নিহত সবুজের বাবা শহীদ মোল্লা বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আদনান হোসেনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮–১০ জনকে আসামি করা হয়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন বলেন, সবুজ হত্যার ঘটনাটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। ওই মামলার একাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও এজাহারনামীয় প্রধান আসামি আদনান এত দিন পলাতক ছিলেন। আদনানকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বহু অভিযান চালালেও এত দিন তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হত্যা মামলাটি এখনো তদন্ত করা হচ্ছে এবং পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়নি।