পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরের চারপাশ জলাবদ্ধ, দর্শনার্থীদের ভোগান্তি

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরের চারপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

সামান্য বৃষ্টিতে নওগাঁর বদলগাছির বিশ্ব ঐতিহ্য পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরের চারপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে দর্শনার্থীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। তাঁরা স্বাভাবিকভাবে মূল মন্দিরের চারপাশ ঘুরতে পারছেন না। মূল মন্দিরের দুটি পাম্প নষ্ট হওয়ায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সূত্রে জানা যায়, জাদুঘরের চেয়ে মূল মন্দির এলাকা অনেক নিচু। বর্ষা মৌসুমে সামন্য বৃষ্টিতে মূল মন্দির এলাকার চারপাশে পানি জমে থাকে। এতে মূল মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। সেখানে দুটি পাম্প বসানো ছিল। পাম্প দুটি অকেজো হওয়ায় সেচকাজ করা যায়নি। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে মূল মন্দির এলাকার কোথাও তিন ফুট, আবার কোথাও পাঁচ ফুট পানি জমে আছে। এ কারণে দর্শনার্থীদের মূল মন্দিরে যেতে সমস্যা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার দর্শনার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক দূর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার দেখতে এসেছি। বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরের চারপাশ পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কয়েকজন হাঁটুপানি ভেঙে মূল মন্দির দেখতে গিয়েছি। আমাদের সঙ্গে থাকা নারী দর্শনার্থীরা যেতে পারেননি।’

বৌদ্ধবিহার গেটসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সবুজ পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরের চারপাশের জলাবদ্ধতা দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, মূল মন্দর ঘিরে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মূল আকর্ষণ। দর্শনার্থীরা এসে মূল মন্দির দেখতে যান। বর্ষা মৌসুমে মূল মন্দিরে পানি জমে থাকত। বৃষ্টি থেমে গেলে দুটি পাম্প দিয়ে জমে থাকা পানি সেচে সরানো হতো। এতে মূল মন্দির জলাবদ্ধ থাকত না। দুই বছর ধরে দুটি পাম্প নষ্ট। এর পর থেকে বর্ষা মৌসুমে মূল মন্দিরের চারপাশ পানি জমে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে দর্শনার্থীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান মোহাম্মদ ফজলুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার দেখতে আসেন। সামান্য বৃষ্টিতেই বিহারের চারপাশ জলাবদ্ধ অবস্থা তৈরি হয়। এ জলাবদ্ধ অবস্থা চার থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত থাকে। এতে দর্শনার্থীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়। বৌদ্ধবিহারে পানি নিষ্কাশনের জন্য তেমন কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও নেই। দুটি মোটর থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। পানি নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত পাম্পের ব্যবস্থা করা হবে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের মন্দিরের চারপাশে জলাবদ্ধ থাকার কথা জানেন না বদলগাছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমীন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কাস্টেডিয়ানের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।