ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট নেই, তবে ভাড়া বেশি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পরিস্থিতি। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর এলাকায়ছবি: আবদুর রহমান ঢালী

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ থেকে মেঘনার গোমতী সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারে যানজট নেই। এতে ঈদে ঘরমুখী মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে। তবে তাদের বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

আজ রোববার ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই মহাসড়কে কোনো যানজট চোখে পড়েনি। তবে ঘুরমুখী মানুষ বাস কিংবা বিভিন্ন পরিবহনে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

এ দিকে গত শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দাউদকান্দির মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা হয়ে ইলিয়টগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট ছিল। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে ঈদযাত্রার ঘরমুখী মানুষদের।

ঢাকায় চাকরি করেন দাউদকান্দির কানড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মাসুম। আজ সকালে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে আলাপকালে তিনি বলেন, ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে তিশা পরিবহনের বাসে ওঠেন। ৫০ কিলোমিটার মহাসড়ক তিনি ৫০ মিনিটে অতিক্রম করেছেন। কোথাও কোনো যানজট পাননি। তবে ঈদ উপলক্ষে বাসের ভাড়া ২০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা গুনতে হয়েছে।

আজ সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-গৌরীপুর-হোমনা সড়কের পেন্নাই স্ট্যান্ডে কথা হয় কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা আবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকার গুলিস্থানে এসে ঢাকা-মতলবের জৈনপুরী পরিবহনের বাসে ওঠেন তিনি। মহাসড়ক ফাঁকা থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছান। কোথাও কোনো যানজট পাননি। তবে স্ট্যান্ডে বাস কম থাকায় বাসের ভাড়া ১০০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ নারী পারুল ঘোষ বলেন, ঢাকার গুলিস্থানে এসে তিনি বিআরটিসি বাস পাননি। পরে ঢাকার একটি লোকাল বাসে ১০০ টাকার ভাড়া ২৫০ টাকা দিয়ে রওনা দেন। ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে বাস চলাচল কমে গেছে। এ জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে উঠতে হয়েছে।

আজ সকাল ৯টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আমিরাদ এলাকায় আলাপকালে চাঁদপুরের প্রসন্নপাড় গ্রামের বাসিন্দা ঢাকায় বসবাসকারী রোজিনা আক্তার বলেন, তাঁর মা মনোয়ারা বেগম, ছয় বছরের ছেলে ওমর ফারুক, পাঁচ বছরের মেয়ে লাবিবাকে নিয়ে সকালে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে যানজট ছাড়াই দাউদকান্দির আমিরাবাদে পৌঁছেছেন। এ রকম স্বস্তির ঈদযাত্রা খুবই আরামদায়ক।

নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকার বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন। সকাল পৌনে ১০টায় তাঁর সঙ্গে কথা হয় গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে। তিনি বলেন, স্ত্রী লামিয়া আক্তার দুই শিশুসন্তান আবদুল্লাহ ও আছিয়াকে নিয়ে সকালে ঢাকা থেকে রওনা দেন। যানজট ছাড়াই তাঁরা চলে এসেছেন।

ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কুমিল্লাগামী এশিয়া এয়ারকন পরিবহনের বাসের চালক শরীফ হোসেন, সায়েদাবাদ থেকে কুমিল্লাগামী এশিয়া লাইন পরিবহনের বাসের চালক মেহেদী হাসান, ঢাকা-হোমনা সুপার পরিবহনের বাসের চালক আক্তার হোসেনের সঙ্গে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে আলাপ হয়। তাঁরা বলেন, আজ ঈদের আগের দিন মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীদের তেমন চাপ নেই।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, আজ ভোর থেকে মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে কোনো যানজট নেই। ঘরমুখী যাত্রীরা স্বস্তিতে বাড়িতে ফিরছে।