মন্ত্রীর কাছে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানালেন স্বজনেরা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে কলেজছাত্র আল আমিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার জানিয়েছেন স্বজনেরা। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনেছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কলেজছাত্র আল আমিন হোসাইনকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা। আজ সোমবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের বাইরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে তাঁরা এই দাবি জানান।

এ সময় আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু নেতা-কর্মী আল আমিন হোসাইনকে হত্যা করেছে। সেটা আমরা সরজমিনে না দেখলেও সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজেই মাধ্যমে দেশবাসী দেখেছে এবং সিসি ক্যামেরাই সেগুলো ধরা পড়েছে। তাঁকে কে মেরেছে, এটা খুঁজে বের করার জন্য আর কোনো কষ্ট করতে হবে না। সব তথ্য–প্রমাণ প্রশাসনের এবং সর্বস্তরের কাছেই আছে। অপরাধীরা যে দলেরই হোক, আমি এর নিন্দা করি এবং তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেশের মানুষ দেখতে পারে সেই কামনা করছি।’

নিহত আল আমিন হোসাইন (১৯) কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলার চন্দ্রায় অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের র‍্যাগ ডে উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পৌর ছাত্রলীগের ১৮ নেতা-কর্মীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মোতালেব মিয়া। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি মিলন রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

আজ সকালে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে চেক হস্তান্তর ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মিলনায়তনের বাইরে নিহত আমিন হোসাইনের স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন। এ সময় আমিন হোসাইনের দাদি মরহজান ও বাবা মোতালেব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। স্বজনেরা মন্ত্রীর পায়ের কাছে বসে পড়েন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তাঁরা হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।

আরও পড়ুন

এ সময় মোজাম্মেল হক তাঁদের উদ্দেশে বলেন, মানুষকে হয়তো ফেরত দেওয়া যাবে না। কিন্তু আল আমিন হত্যার বিচার যাতে দৃষ্টান্তমূলক হয়, তার শতভাগ নিশ্চয়তা আমরা দিচ্ছি। এই খুনের সঠিক বিচার না হলে ভবিষ্যতে আরও খুনখারাবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘সরকার পুলিশ বাহিনীর সাবেক প্রধানের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান যাঁরা অন্যায় করেছেন, অপকর্ম করেছেন, বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁরা ছাড় পাইনি। কালিয়াকৈরের ঘটনাও প্রধানমন্ত্রী জানেন। তিনি ভারত সফরে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি পুলিশপ্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেকোনো মূল্যেই হোক আল আমিনের হত্যাকারীদের যেন খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়।’

আরও পড়ুন